Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

40খোলা বাজার২৪,শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫: ভারতের কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধি ও তার ছেলে দলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধি ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ মামলায় দিল্লির বিচারিক আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়েছেন।

এনডিটিভি বলছে, ৫ মিনিটের কম সময়ের শুনানিতে আদালত বিরোধীদলীয় নেতা ও তার ছেলেকে জামিনের আদেশ দেন।

সোনিয়া আদালতে হাজির হওয়ার কিছু সময় আগে মেয়ে প্রিয়াঙ্কাও আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন।

দেশটির বর্তমান বিরোধীদলীয় এই দুই নেতার আদালতে হাজির হওয়াকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৭শ’ সদস্য আদালত ভবনের আশপাশে সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।

এই দুই শীর্ষ রাজনৈতিক নেতার আদালতে হাজির হওয়ার সময় একটি ফটক ছাড়া সব ফটক সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে ভারতের গণমাধ্যমের খবর। নিরাপত্তা তদারকির জন্য আদালত প্রাঙ্গণে একটি অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন দিতে কংগ্রেসের সদরদপ্তর ২৪ আকবর রোডে পার্টির সমর্থক, নেতা ও আইন প্রণেতারা জড়ো হচ্ছেন।

আদালতে হাজিরা শেষে সোনিয়া ও রাহুল কংগ্রেসের সদর দপ্তরে গিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই ঘটনার জেরে কংগ্রেস সমর্থকরা ভোপাল, বেঙ্গালুরু এবং মুম্বাইয়ে বিজেপিবিরোধী মিছিল করেছে।

এর আগে এই মামলায় কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট সোনিয়া ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাহুলকে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লি হাই কোর্ট।

নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে সমন জারি না করার জন্য সোনিয়া-রাহুলের করা আবেদন দিল্লি হাই কোর্ট খারিজ করে দেয়।

কংগ্রেস নেতা মনু সাংভি এ মামলায় ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন।

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশেই এটি করা হচ্ছে কি না- সোনিয়াকে এ প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, “বিচারের ভার আপনাদের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছি। আমি ইন্দিরা গান্ধির পুত্রবধূ। কোনো কিছুতেই ভয় পাই না।”

ন্যাশনাল হেরাল্ড অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে সোনিয়া ও রাহুল ছাড়াও কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতাসহ প্রয়াত রাজীব গান্ধির এক বন্ধুর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তামিলনাড়ুর রাজনীতিবিদ বিজেপি নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী।

সোনিয়া ও রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা দলীয় তহবিল তছরুপ করে জহরলাল নেহেরুর প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল হেরাল্ড নামের ওই ইংরেজি পত্রিকাটির সম্পত্তি কিনে মুনাফা করেছেন ও আয়কর আইন ভেঙেছেন।

ছেলে রাহুল গান্ধির সঙ্গে সোনিয়া গান্ধি (ফাইল ছবি) ছেলে রাহুল গান্ধির সঙ্গে সোনিয়া গান্ধি (ফাইল ছবি)
যদিও মা-ছেলে উভয়ই দলীয় তহবিল কেলেঙ্কারি এবং কোনো অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

কংগ্রেস পার্টি বলছে, ক্ষমতাসীন দলের এক নেতা তাদের নেতাদের ‘হেনেস্তা’ করছেন। এর প্রতিবাদে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে দলটি।

যদিও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই মামলায় তাদের কোনো ভূমিকা নেই এবং কংগ্রেস আদালতের সিদ্ধান্ত ও রাজনীতিকে একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলছে।

১৯৩৮ সালে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার কার্যক্রম শুরু করেন। নেহেরু রাহুলের প্রপিতামহ।

ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সুব্রামানিয়ামের অভিযোগ, সোনিয়া ও রাহুল করমুক্ত অর্থ থেকে ‍ঋণ হিসেবে ন্যাশনাল হেরাল্ডকে ৯০ কোটি রুপি দেন।

এছাড়া, কংগ্রেস নেতারা বে আইনীভাবে মাত্র ৫০ লাখ রুপিতে দিল্লিতে অবস্থিত ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার সম্পত্তি কিনে নেয়। সুব্রামানিয়ামের অভিযোগ, ওই সম্পত্তির মূল্য কয়েক হাজার কোটি রুপি ছিল।

কয়েক দশক ধরে অব্যবস্থাপনা ও ক্ষতির মধ্যে থাকায় ২০০৮ সালে ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।