খোলা বাজার২৪,শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫: মাংশাসী সেই গাছটির কথা তো সবাইই জানে, যেটা এমনিতে দেখতে সুন্দর আর রঙচঙে হলেও ধারে-কাছে গেলেই ধারালো দাঁত দিয়ে আক্রমণ করে বসে সবাইকে। ঠিক তেমনি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহার্য এমন কিছু পোশাক রয়েছে যেগুলো বাইরে থেকে দেখতে সাধারণ আর আধুনিক মনে হলেও আদতে খুব সহজেই এগুলো হতে পারে আমাদের মৃত্যুর কারণ।
অবাক করা হলেও সত্যি যে, মানুষ এই পোশাকগুলো নানা সময়ে তৈরি করেছে আর ব্যবহার করছে নিজেকে আরো একটু ধোপদুরস্থ দেখাতেই। কিন্তু বাস্তবে ঠিক কী কী করতে পারে এগুলো সে সম্পর্কে এতটুকুও ধারনা ছিলনা এর ব্যবহারকারীদের। সেই ইতিহাসের প্রথম থেকে শুরু করে আজকের সময়েও এমনই মানুষের হাতে তৈরি প্রাণসংহারী কিছু দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহার্য পোশাক নিয়ে আজকের এই আয়োজন।
ফন্টেজ
না, এমনিতে দেখতে মোটেও প্রাণসংহারী বলে মনে হবেনা আপনার ফন্টেজ নামের এই মাথার পোশাকটিকে। মাথার আবার পোশাক? এটাই ভাবছেন তো? টুপি নয়, স্কার্ফ নয়- অনেকটা পোশাকই বলা চলে ১৭ ও ১৮ শতকের এই জনপ্রিয় জিনিসটিকে। যেটা কিনা নারীরা নিজেদের মাথায় বেশ যতœ নিয়ে পরিধান করতেন। প্রথমদিকে খুব একটা ব্যাতিক্রম কিছু ছিলনা এটি। ছিলনা চোখে পড়ার মতনও। তবে একটা সময়, বিশেষ করে ১৭ শতকের শেষ দিকে এসে ফন্টেজ এতটাই বাড়তি সামগ্রী, যেমন- ফিতা, জাল, সুতোর মালার মতন জিনিস দিয়ে ছেয়ে গেল যে তার আকৃতি হয়ে গেল বিশাল (ক্র্যাকড)। সেই সাথে বেড়ে গেল এটি পারিধান করা নারীর জীবনে ঝুঁকির মাত্রাও। আর সেই ঝুঁকি যে কতটা সেটা বোঝাবার জন্যেই মিসেস ভন নামক এক নারীর ফন্টেজে সেবার লেগে গেল চারপাশে রাখা ঘরের মোমবাতি। পুরোপুরি দাহ্য জিনিসগুলোই সাথে সাথে লেগে গেল আগুন আর ছড়িয়ে পড়ল মিসেস ভনের পুরো দেহে। বেশ বিভৎসভাবে পুড়ে গেলেন মিসেস ভন। সেই থেকে ফন্টেজের চলনটা কিছুটা হলেও কমে গিয়েছে মানুষের ভেতরে।
উঁচু কলার
ফ্যাশনে বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে ১৯ শতকের দিকে উঁচু কলার একটা বেশ জনপ্রিয় আকর্ষণ হয়ে দাঁড়ায় ছেলেদের ভেতরে। এটি ছিল মূলত এক ধরনের আলাদা করে লাগানোর জন্যে তৈরি কলার। যেটা পোশাকের উপরে উঠে থাকতো। আভিজাত্যের প্রতীক এই পোশাকটি সেসময় সব পুরুষই ব্যবহার করলেও পরবর্তীতে ঝামেলা বাঁধে যখন সবার সামনে উঠে আসে এর বাজে দিকটি। ঘুমের ভেতরে রক্ত সঞ্চালনের শিরা কেটে ফেলা ছাড়াও শ্বাসকষ্ট তৈরি করে মানুষকে মেরে ফেলতে সক্ষম ছিল এই কলার ( ক্র্যাকড )। বিশেষ করে ১৮৮০ সালে গাড়ি থেকে তাড়াহুড়ো করে বেরোবার সময় আটকে গিয়ে গলা কেটে যাওয়া আর প্রচন্ড রক্তপাতের মতন ঘটনা ঘটবার পর পুরুষেরা এই উঁচু কলারকে এড়িয়ে চলতে থাকে।
স্কার্ফ
লম্বা স্কার্ফ পরিধানের অভ্যাস ছিল তখন পৃথিবীর অনেক দেশেই। আর তাদের ভেতরে নিজের সিগনেচার স্কার্ফের জন্যে বিখ্যাত ছিলেন নাচিয়ে ইসাডোরা ডানকান। তবে ফ্রান্সের এই সেরা নাচিয়ের মৃত্যুও ডেকে আনে এই স্কার্ফটিই ( এনআই পোস্ট )। সেবার নিজের ভক্তদের উদ্দেশ্যে কথা বলছিলেন ডানকান। আর সেসময়ই তার স্কার্ফের একাংশ পেঁচিয়ে যায় একটি চাকার সাথে। অকস্মাৎ গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে দ্রুতই মৃত্যু ডেকে আনে ইসাডোরা ডানকানের বন্ধুর কাছ থেকে উপহার পাওয়া এই স্কার্ফ।(অনলাইন)