খোলা বাজার২৪,সোমবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫: মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনো বাধার সৃষ্টি হলে অর্থাৎ মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় ক্ষতি হলে ব্রেইন স্ট্রোক হয়। সব স্ট্রোক রোগীর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় না। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, খিঁচুনি, অচেতন রোগী অথবা অন্য সমস্যা, যেমন অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি থাকলে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন। চিকিৎসার প্রধান উদ্দেশ্য মৃত্যুঝুঁকি কমানো, কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনা এবং পরে যেন স্ট্রোক না হয়, তার ব্যবস্থা করা।
ব্রেইন স্ট্রোক চেনার উপায়
মুখ বেঁকে যাওয়া: ব্রেইন স্ট্রোকের প্রধান লক্ষণ মুখ বেঁকে যাওয়া এবং হাসতে না পারা। রোগী মুখের এক পাশে অসাড়তা অনুভব করলে অথবা এক পাশ বেঁকে গেলে, তাকে হাসার জন্য অনুরোধ করুন। হাসতে না পারলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাতে দুর্বলতা: এক অথবা উভয় হাত অবশ বা দুর্বলতা অনুভব করাও স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে। এমন রোগীকে হাত ওপরে ওঠাতে বলুন। স্ট্রোকের রোগী হলে হাত ওপরে ওঠাতে পারবে না। ওপর দিকে ওঠাতে গেলেও হাত নিচের দিকে নেমে আসবে।
কথা বলতে অসুবিধা: স্ট্রোকের রোগী বক্তৃতা দেওয়ার সময় ঠিকমতো কথা বলতে পারবে না। বিষয়টি পরীক্ষা করতে তাদের একই প্রশ্ন বারবার করুন। দেখবেন, তারা সঠিকভাবে উত্তর দিতে পারবে না।
ভারসাম্য ঠিক থাকবে না: স্ট্রোকের রোগী নিজের শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে না। তারা চলাচলের সময় সমন্বয়ের অভাব অনুভব করে।
মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা: কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে প্রচণ্ড মাথাব্যথা অনুভব হতে পারে। সাধারণত এটি হেমোরেজিক স্ট্রোকের ইঙ্গিত করে।
অজ্ঞান রোগীর ক্ষেত্রে করণীয়
১. শ্বাসনালি, শ্বাসপ্রশ্বাস ও রক্ত সঞ্চালন নিয়মিত রাখার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে।
২. রোগীকে একদিকে কাত করে, বালিশছাড়া মাথা নিচু করে শোয়াতে হবে।
৩. চোখ ও মুখের যতœ নিতে হবে।
৪. প্রস্রাব আটকে গেলে বা প্রস্রাব ঝরলে প্রয়োজনে ক্যাথেটার দিতে হবে।
৫. পুষ্টি ও খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে নাকে নল দিতে হতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
স্ট্রোক প্রতিরোধে চাই সচেতনতা। রক্তের চর্বি, রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান বর্জন, নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন ঠিক রাখা, পর্যাপ্ত পরিমাণ শাকসবজি, সতেজ ফলমূল খাওয়ার মাধ্যমে ঝুঁকি কমাতে পারেন।
সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল