খোলা বাজার২৪,সোমবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫: শান্তিতে নোবেল পেয়ে আসছেন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কোনো বস্তু? না, এমনটি কখনো ঘটেনি। সেক্ষেত্রে বাইসাইকেলকে যদি পুরস্কারটি দেওয়া হয়? আগামী বছর এমনটি যাতে ঘটে, সেটাই প্রত্যাশা করছেন ইতালির একটি রেডিওর এক জনপ্রিয় শোর দুই উপস্থাপক মাসিমো কিরি ও সারা জামবটি। তাঁরা মনে করেন, ২০১৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারটা বাইসাইকেলের পাওয়া উচিত। সাইকেলই এই পুরস্কার পাওয়ার সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী।
এটুকুতেই ওই দুই উপস্থাপক বসে নেই। দাবির পক্ষে সমর্থন আদায়ে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছেন তাঁরা। এই কার্যক্রমের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘বাইক দ্য নোবেল’।
উদ্যোক্তারা বাইসাইকেলকে ‘শান্তির যন্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাঁদের যুক্তি, বিশ্বে তেল নিয়ে প্রায়ই যুদ্ধ লাগে। বাইসাইকেল চালাতে তেল লাগে না। তাই বাইসাইকেল কোনো যুদ্ধও সৃষ্টি করে না।
উদ্যোক্তারা বলছেন, সব মানুষের জন্য সবচেয়ে গণতান্ত্রিক যানবাহন বাইসাইকেল। সব জায়গায় বাইসাইকেল পাওয়া যায়। কম খরচের এই যানবাহন সবাই ব্যবহার করতে পারেন। বাইসাইকেল দূষণ করে না। এভাবে এই যানবাহনটি পরিবেশ রক্ষায় অনবদ্য ভূমিকা রাখছে, যা শান্তি প্রতিষ্ঠারই নামান্তর। তা ছাড়া জ্বালানিচালিত গাড়ির তুলনায় বাইসাইকেল সমাজের জন্য বিপুল আর্থিক সুবিধা দেয়।
মাসিমো ও সারার ভাষ্য, বাইসাইকেলে দুর্ঘটনা কম হয়। সেই সুবাদে কম হয় হতাহতের ঘটনাও। বাইসাইকেল মানুষের মধ্যকার দূরত্ব কমায়। শিশুদের উন্নয়নে সহায়তা করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বাধীনতার সংগ্রাম ও প্রতিরোধযুদ্ধে মানুষের জীবনরক্ষায় অবদান রেখেছে বাইসাইকেল।
উদ্যোক্তারা তাঁদের শ্রোতা এবং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাইসাইকেল-সমর্থকদের ‘বাইক দ্য নোবেল’ কর্মসূচিতে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, আবেদনের পক্ষে যতটা সম্ভব স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে। স্বাক্ষরসহ সেই আবেদন ২০১৬ সালের ফেব্র“য়ারিতে নরওয়ের নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটির কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
দূষণ থেকে সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব নিয়ে বিশ্ববাসী দারুণ উদ্বিগ্ন। এ নিয়ে দফায় দফায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনও করছেন বিশ্ব নেতারা। এমন প্রেক্ষাপটে ‘বাইক দ্য নোবেল’ উদ্যোগ অনেকের মধ্যে সাড়া ফেলেছে।—বিবিসি অবলম্বনে