খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার,২২ ডিসেম্বর ২০১৫: একাত্তরে যাদের হাতে গড়ে তোলা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র বাঙালিকে স্বাধীনতার লাল সূর্যের বার্তা দিয়ে যুগিয়েছিল লড়াইয়ের প্রেরণা, তাদেরই একজন শব্দযোদ্ধা রাশিদুল হোসেন সব যুদ্ধ সাঙ্গ করে চিরবিদায় নিলেন।
মঙ্গলবার ভোর ৪টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রাশিদুলের বয়স হয়েছিল প্রায় ৮০ বছর।
বিএসএমএমইউ’র প্রো ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “রাশিদুল হোসেন
বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন। তার শ্বাসকষ্টও ছিল। বাইরের একটি হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় আমরা এখানে নিয়ে এসেছিলাম।”
বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তারা জানান, সকাল ১০টার দিকে রাশিদুল হোসেনের মরদেহ আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বেতার কার্যালয়ে নেওয়া হবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। সেখানেই জানাজা হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামের বাড়িতে তার দাফন হতে পারে।
১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনী যখন মুক্তিকামী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তখন বেতারের একদল কর্মী চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রকে ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ ঘোষণা দেন। সেখান থেকেই ২৬ শে মার্চ আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর দেওয়া স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন, যা পরদিন পাঠ করেন জিয়াউর রহমানও।
যে দশ সাহসী সৈনিকের উদ্যোগে স্বাধীন বাংলা বেতারের সূচনা, তারা হলেন- সৈয়দ আবদুস শাকের, বেলাল মোহাম্মদ, রাশিদুল হোসেন, আমিনুর রহমান, শারফুজ্জামান, মুস্তফা আনোয়ার, আবদুল্লাহ আল ফারুক, রেজাউল করীম চৌধুরী, আবুল কাশেম সন্দীপ ও কাজী হাবীব উদ্দিন।
৩০ মার্চ স্বাধীন বাংলা বেতারে প্রথমবারের মতো শোনা যায় ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’। ওইদিন দুপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় এ বেতারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরে ত্রিপুরা রাজ্যের বাগাফা এবং আগরতলার শালবাগান থেকে স্বাধীন বাংলা বেতারের শব্দসৈনিকেরা মুক্তির জন্য যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত।