খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫: থ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিতর্কিত করে পাকিস্তানিদের মন জয় করাই খালেদা জিয়ার একমাত্র লক্ষ্য।
তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, বেগম জিয়া শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কিন্তু খালেদা জিয়া যেখানে বসে আছেন, সেখান থেকেই একমুঠো মাটি তুলে দেখুন, সেখানে শহীদের রক্ত আছে, আর আছে নির্যাতিত মা-বোনের কান্না।’
মরক্কোতে ইসলামী দেশগুলোর সংস্থা (ওআইসি) আয়োজিত আফ্রিকান মিডিয়া ফোরামে যোগদান শেষে বুধবার ঢাকায় প্রত্যাবর্তনের পর সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) মিলনায়তনে ‘সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার ও মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর থেকে স্বশাসিত বাংলাদেশ ২৬ মার্চ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীন বাংলাদেশের ওপর হামলাকারী পাকিস্তানী বাহিনী ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারতের যৌথবাহিনীর পায়ের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকারকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। মহান বিজয় দিবস তাই হানাদার পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয়।’
ইনু বলেন, ‘রাজাকার-জঙ্গিরা পশুর মতো মানুষ হত্যা করেছে। আমরা পশু নই। তাই বিচারের জন্য ৪০ বছর অপেক্ষা করেছি। আমরা বীর, যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই করি, যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে কাউকে হত্যায় বিশ্বাস করি না।’
মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক যুদ্ধ এবং বাঙালিকে বীরযোদ্ধা জাতি বলে অভিহিত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ছিল কোটি-কোটি বাঙালির ঠিকানা খোঁজা আর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রাম। বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন এ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অমর হয়ে রয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার অর্থ, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশকে খাটো করা।
১৯৯০ সালে বাংলাদেশকে সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হওয়া থেকে বঞ্চিত করার জন্য বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দায়ী করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘খালেদা জিয়া রাজাকার-জঙ্গির সাথে চুক্তি করেন আর ডিজিটাল প্রযুক্তির সুতো কেটে দেন। অপরদিকে তথ্যপ্রযুক্তির মহাসড়কে দেশকে যুক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বকালের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’ তথ্যমন্ত্রী এসময় সাইবারজগতকে জঙ্গি ও সাইবারঅপরাধীমুক্ত রাখার জন্য আইন ও প্রযুক্তির সময়োপযোগী প্রয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মহান বিজয় দিবস ২০১৫ উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই প্রথম ২০০৮ সালের নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে দেশগড়ার দূরদর্শী পরিকল্পনা হিসেবে ৫ বছরের নয়, ‘ভিশন ২০২১’ এর মাধ্যমে ১২ বছরের নীতি ও পরিকল্পনা দেন।’
তরুণদের ঐক্যবদ্ধভাবে রাজাকার-জঙ্গি মোকাবেলা করার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘একাত্তরে নিরস্ত্র বাঙালি অস্ত্র তুলে নিয়েছিল, এখন তথ্যপ্রযুক্তির অস্ত্র দিয়ে সংগ্রাম করবে তরুণেরা।’ স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ে প্রামাণ্যচিত্র ও বাপ্পা মজুমদার ও বুশরা শাহরিয়ারের বিজয়ের গানের ভিডিও প্রদর্শনীসমৃদ্ধ এ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পার্থ প্রতিম দেব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জসিম উদ্দিন এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম।