খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫ : চড়ঁৎড় হরৎনধপযড়হথ১পৌর ভোটের দিন পাঁচ কারণে গোলযোগের শঙ্কার কথা জানিয়ে তা নিরসনে দুই দফা সুপারিশসহ গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; এবার মোট ভোটকেন্দ্রের এক তৃতীয়াংশই চিহ্নিত হয়েছে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে।
কমিশনের একজন উপ সচিব জানান, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের এই প্রতিবেদন তারা বুধবার হাতে পেয়েছেন। এখন সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা পাঠানো হবে, যাতে ভোটে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোটে থাকা ২৩৩ পৌরসভার মোট ৩৪০৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১ হাজার ১৮৪টিই ঝুঁকিপূর্ণ, যা মোট ভোটকেন্দ্রের ৩৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কেন্দ্র খুলনায়। এ বিভাগের ৪৭১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৯৫টিই ঝুঁকিপূর্ণ।
এছাড়া রংপুর বিভাগে ৩০৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১৮টি, বরিশাল বিভাগে ১৬৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬৩টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৬৯টি, ঢাকা বিভাগে ৯৯১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৪৮টি, রাজশাহী বিভাগে ৮০১টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৪৬টি এবং সিলেট বিভাগে ১৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৫টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ মঙ্গলবার বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে। জেলা ও পুলিশ প্রশাসন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে এ ব্যবস্থা নেবে।
গোলযোগের শঙ্কা
ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে গোলযোগের পাঁচটি সম্ভাব্য কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে।
তাতে বলা হয়েছে- বিএনপি, জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীরা তাদের প্রার্থীদের জয়ী করতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ‘ভোটকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখার’ চেষ্টা করতে পারে, ‘নাশকতা বা গোলযোগ সৃষ্টির’ চেষ্টা চালাতে পারে; এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও একচেটিয়া ভোট পাওয়ার চেষ্টায় ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সমর্থিত প্রার্থীরা’ কিছু কেন্দ্রে গোলযোগ সৃষ্টি করতে পারে; নির্বাচনকে ‘বিতর্কিত কিংবা রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে’ বিএনপি-জামায়াত ‘গোলযোগ’ সৃষ্টি করতে পারে।
এছাড়া ভোটের পর পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা ‘বিক্ষুব্ধ হয়ে বা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কিংবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে’ এলাকায় গোলযোগ সৃষ্টি করতে পারে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, একাধিক প্রার্থীর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় গোলযোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারাদেশে বিভিন্ন কেন্দ্রে দলীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক পৌরসভায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থী (বিদ্রোহী) থাকায় দলীয় অর্ন্তকোন্দলের কারণে বিভিন্ন কেন্দ্রে সহিংসতা হতে পারে।
এছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় উগ্রপন্থি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে গোলযোগ করতে পারে বলেও গোয়েন্দারা মনে করছেন।
দু’দফা সুপারিশ
পৌর নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা জোরদার করার পাশাপাশি ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগ থেকে নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রাখা উচিৎ।
‘সংখ্যালঘু অধ্যুষিত’ এলাকাগুলোতে ভোট গ্রহণের আগ থেকে নির্বাচনের পর পর্যন্ত সার্বক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, কেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় প্রভাবশালী ব্যক্তির বাড়ি থাকলে, প্রার্থীর বাড়ির কাছে কেন্দ্র হলে, কোনো দল বা গোষ্ঠীর প্রভাবের এলাকায় কেন্দ্র হলে, দুর্গম এলাকার কেন্দ্রে যাতায়াত কঠিন হলে সেগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়।
৩০ ডিসেম্বর ভোট সামনে রেখে ইতোমধ্যে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৯ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ২০ জন করে নিরাপত্তা সদস্য নিয়োগের বিষয়ে ইসির চাহিদার ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মতি দিয়েছে।
স্বরাষ্ট্র সচিব মোজাম্মেল হক খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইসির চাহিদার চেয়ে বেশি নিরাপত্তা সদস্য ভোটে থাকবে। সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।