খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫ : শিরোপাধারী আফগানিস্তানকে সমীহের চোখে দেখতেই হচ্ছে বাংলাদেশকে। তবে অতীত রেকর্ড থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে মামুনুলদের লক্ষ্য একটাই, আফগানদের হারিয়ে সাফ ফুটবলের শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন শুরু করা।
আগামী বৃহস্পতিবার ত্রিভান্দ্রাম স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটায় ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। আগের পাঁচ ম্যাচের চারটি ড্র হয়েছে, একটিতে জিতেছিল বাংলাদেশ। ১৯৮০ সালের এশিয়ান কাপের কোয়ালিফায়ারে ৪-১ গোলের সেই জয় থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে মাঠে নামছে মারুফুল হকের দল।
কোচ ফাবিও লোপেজের বিদায়ের পর দলকে গুছিয়ে নিতে খুব বেশি সময় পাননি মারুফুল। দিন কুড়ির প্রস্তুতি আর প্রীতি ম্যাচে নেপালকে ১-০ গোলে হারিয়ে ত্রিভান্দ্রামে এসেছে বাংলাদেশ। তবে অল্প সময়ে দলকে তৈরি করে সাফ শিরোপা পুনরুদ্ধারের চ্যালেঞ্জটা নিয়েছেন ঘরোয়া ফুটবলে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে ট্রেবল জেতানো এই কোচ। সেই চ্যালেঞ্জের শুরুতেই প্রতিপক্ষ টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিটরা।
পিছপা না হয়ে আক্রমণে থাকার পুরোনো কৌশলটা আফগানিস্তান ম্যাচের জন্যও বেছে নিয়েছেন মারুফুল। ছক বাস্তবায়নের সেরা একাদশও মোটামুটি সাজিয়ে রেখেছেন তিনি। ইয়ামিন মুন্না, নাসিরউদ্দিন চৌধুরী, ইয়াসিন খান আর নাসিরুল ইসলাম-এই চার জনের কাঁধে রক্ষণভাগ সামলানোর ভার পড়ার সম্ভাবনা বেশি। মোনায়েম খান রাজু, সোহেল রানা আর অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের ওপর থাকবে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দায়িত্ব।
অসুস্থতার কারণে প্রথম ম্যাচে জামাল ভূইয়ার শূন্যতা পূরণে রাজুর দিকে তাকিয়ে আছেন কোচ। অধিনায়ক মামুনুলের বিশ্বাস, “রাজু পারবে।” কোচ নিজেও বলেছেন, “রাজুর ওপর আস্থা আছে আমার।”
শারীরিকভাবে লম্বা গড়নের কারণে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের গোলপোস্টের নিচে শহিদুল আলম সোহেলের দাঁড়ানো অনেকটাই নিশ্চিত। দুই উইংয়ে হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস কিংবা জুয়েল রানার সঙ্গে জাহিদ হোসেনের কাঁধে আক্রমণ ও প্রতিপক্ষের ফরোয়ার্ডদের ওপরে উঠতে না দেওয়ার দায়িত্ব দিতে পারেন কোচ। চোটের কারণে কেরালায় আসতে না পারা নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার জাহিদ হোসেন এমিলির জায়গায় নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে গোল করা শাখাওয়াত হোসেন রনির খেলা অনেকটাই নিশ্চিত।
একাধিক ম্যাচের ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ সম্পর্কে মোটামুটি পরিষ্কার ধারণা নিয়েছেন মারুফুল। তার মনে হচ্ছে, টেকনিক আর দক্ষতায় দুই দলের মধ্যে তফাৎ নেই; শারীরিকভাবে ও ট্যাকটিক্যালি-এই দুই দিক থেকে এগিয়ে আফগানিস্তান। তবে এ কমতিটুকু পূরণের ছকও সাজিয়ে রেখেছেন তিনি।
“যদি আমরা দুই উইং দিয়ে আক্রমণে যেতে পারি, বল নিয়ে খুব বেশি মুভ করতে পারি, তাহলে ওদের আটকানো যাবে। ওদেরকে আসলে উপরে উঠে এসে খেলতে দেওয়া যাবে না।”
“সেট পিসে ওরা ভালো। এই দিকটায় ওদের অনেক বৈচিত্র আছে। ছেলেদের সেগুলো দেখিয়েছি; যার যা করণীয়, তাও বলে দিয়েছি। জোনাল মার্কিংটা ভালোভাবে করতে হবে,” যোগ করেন তিনি।
আফগানিস্তান কোচ পিটার সেগ্রেট অবশ্য টুর্নামেন্টের অব্যবস্থাপনা নিয়ে যারপরনাই বিরক্ত। দুই দিন আগে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এসে আয়োজকদের ধুয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তবে প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশসহ সব প্রতিপক্ষকে সমীহ করে মুকুট ধরে রাখার লক্ষ্য ঠিকই জানিয়েছেন সেগ্রেট।
“প্রতিপক্ষের সবাইকে আমি সমীহ করি। তবে আমরা টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন; টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।