খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৫ : দেশে ও বিদেশে সব ধর্মের মানুষের সম্প্রীতি প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন উদযাপন শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বিভিন্ন গির্জা ও উপাসনালয়ে ‘মিশ-আউট’ বা যজ্ঞানুষ্ঠানের প্রার্থনার মাধ্যমের এর সূচনা হয় বলে ফাদার তপন ডি রোজারিও জানান।
ফার্মগেইটের তেজগাঁও খ্রিস্টপল্লীতে এই প্রার্থনা শেষে কথা হয় এই ধর্মীয় গুরুর সঙ্গে। এর আগে দেড় ঘণ্টা সেখানে উপস্থিতরা প্রার্থনা করেন।
এসময় তারা মঙ্গলবাণী পাঠের মাধ্যমে নিজের পরিশুদ্ধি এবং জগতের সব মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা করেন।
তপন ডি রোজারিও জানান, রাত ১১টায় ‘মিশ-আউট’ প্রার্থনার মাধ্যমে এটা শুরু হয়েছে। খ্রিস্টজাত স্মরণ প্রার্থনা বলা হয় একে। এটাকে যজ্ঞানুষ্ঠান বলা যায়।
তিনি বলেন, “বড়দিন শুরু হয় এক মাস আগ থেকে। মাসের ১ তারিখ থেকে চারটি আগমন সপ্তাহে আমরা পালন করি। সেখানে প্রার্থনা ও নিজের পরিশুদ্ধ করার মাধ্যমে আমরা বড়দিনের এই পর্যায়ে এসে পৌঁছাই।
“এটা বলিদানের মুহূর্ত। এই সময়ে যিশু সকল মানুষের কল্যাণার্থে আত্মবলিদান করেছেন। এ কারণে এরপর থেকে আমাদের আর বলিদানের দরকার পড়ে না।”
বড় দিনের প্রথম প্রহরে বড়দিনের প্রথম প্রহরে ঢাকার ফার্মগেইটের হলি রোজারি চার্চে আলোকসজ্জা। ছবি: আসাদুজ্জামান প্রামানিক বড় দিনের প্রথম প্রহরে বড়দিনের প্রথম প্রহরে ঢাকার ফার্মগেইটের হলি রোজারি চার্চে আলোকসজ্জা। ছবি: আসাদুজ্জামান প্রামানিক ধর্ম মাত্রই সম্প্রীতির শিক্ষা দিলেও মানুষেরাই ধর্মের নামে অধর্মের কাজ করে বলে মন্তব্য করেন তপন ডি রোজারিও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, “বিশ্ব অঙ্গনে উদ্বাস্তু সমস্যাসহ নানা সমস্যার কারণে ধর্মকে দোষারোপ করা হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, যদি সম্প্রীতি রক্ষা করি এবং সকল ধর্মের মানুষ এক হলে ওরা পালিয়ে যাবে।”
গুলশান এলাকা থেকে ফার্মগেইটে ওই গির্জায় আসেন একটি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা আশিষ রোজারিও।
প্রার্থনা শেষে তিনি বলেন, “আমরা প্রার্থনা করছি, দেশে ও বিশ্বের সকল প্রান্তে যেন শান্তি বিরাজ করে। সাম্প্রদায়িকতার নামে যে হানাহানি হচ্ছে তা যেন বন্ধ হয়।”
তার সঙ্গে থাকা আরেক প্রার্থনাকারী লাভলী রোজারিও বলেন, “সবাই যেন মিলে মিশে থাকতে পারি এই আমাদের চাওয়া। ধনী-গরিব, উঁচু-নিচুর বৈষম্য না থাকার যে কামনা যিশুর ছিল তা যেন প্রতিফলিত হয়।”