খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৫ : বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় দুই হাজার ২৯ জন সন্ত্রাসী সক্রিয় রয়েছে জানিয়ে পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের ধরতে অভিযান চালানোর সুপারিশ করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা।
এ তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ১ হাজার ১২১ জন বিএনপির সমর্থক বলে প্রতিবেদনে দেখা গেছে।
এছাড়া আওয়ামী লীগের ৫৬১ জন, জামায়াতে ইসলামীর ২১১ জন, জাতীয় পার্টির চারজন এবং পাহাড়িদের সংগঠন জেএসএসের ১০ জন ও পিসিপির একজন রয়েছেন। এদের বাইরে ১২১ জনের নাম এসেছে সন্ত্রাসী তালিকায়।
বৃহস্পতিবার বিকালে ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ সচিব এ তালিকা গ্রহণ করেন।
গোয়েন্দা সংস্থাটির পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে দুই পৃষ্ঠার প্রতিবেদন এবং ২০০৪ পৃষ্ঠার তালিকা সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
সক্রিয় সন্ত্রাসী, ‘গডফাদার’ ও আশ্রয়দাতাদের নাম, ঠিকানা ও রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরে তাদের গ্রেপ্তারে শিগগির অভিযানের সুপারিশ করেছে তারা।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণার সময় স্থানীয় সন্ত্রাসী-ক্যাডাররা সক্রিয় রয়েছে।
সন্ত্রাসীরা সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে উল্লেখ করে দুই পৃষ্ঠার সারসংক্ষেপে গোয়েন্দা সংস্থাটি বলেছে, তারা সাধারণত পাইপগান, রিভলবার, বন্দুক, শুটারগান, পিস্তল, কাটা রাইফেল ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে থাকেন।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩৩ পৌরসভা ভোট সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র সচিব মোজাম্মেল হক খানের কাছে এ তালিকা পাঠানো হয়েছে।
ভোটের দুই দিন আগে মাঠে নামবে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার-ভিডিপি ও এপিবিএনের সদস্যরা। ভোটের পরদিন পর্যন্ত মাঠে থাকবেন তারা।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিভাগ, জেলা ও উপজেলাওয়ারি এ তালিকা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে, যাতে পুলিশ প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে।
“আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে নামলে নিয়মিত ব্যবস্থার পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে অভিযান পরিচালনা করবে,” বলেন একজন উপসচিব।
তালিকা অনুযায়ী সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা ও ‘গডফাদার’ এর সংখ্যা ৬৩৭ জন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ২১১ জন, বিএনপি ৩১২ জন, জামায়াতের ৭৭ জন, পিসিপি একজন, জেএসএসের একজন ও অন্যান্য ৩৫ জন জড়িত রয়েছে।
বোমাবাজি ও কেন্দ্র দখলের শঙ্কা
স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বোমাবাজি, ভয়ভীতি ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভোটের দিন কেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও ভোটকেন্দ্রে বাধা দিয়ে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থাটি।
“তারা সক্রিয় থাকলে সহিংসতা ও প্রাণহানির শঙ্কা বাড়বে,” বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এছাড়া সরকারবিরোধী সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটদানে বাধা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে গোয়েন্দা সংস্থাটি।
দলগুলোকে সহযোগিতার সুপারিশ
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসী-ক্যাডারদের ম“দাতা ও ‘গডফাদারদের’ বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশনার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
সন্ত্রাসীরা যাতে কেন্দ্র দখল করতে না পারে সেজন্য প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা চাওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।