Wed. May 14th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

37খোলা বাজার২৪,শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫: মামলার রায় দিতে দেরি না করতে বিচার বিভাগকে তাগিদ দিয়েছেন রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদ।
তিনি বলেছেন, “একটি দরখাস্তের শুনানি সমাপ্ত হবার পর বা মোকদ্দমার যুক্তিতর্ক শুনানির পর আদেশ লাভে বা রায় প্রকাশিত হতে যাতে বিলম্ব না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রায় বা আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে অহেতুক বিলম্ব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
বাংলাদেশে মামলাজট নিয়ে আলোচনার মধ্যে শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রথম জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে একথা বলেন আবদুল হামিদ।
দ্রুত মামলার রায় হলে বিচারকদের ওপর জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
“এতে বিচার বিভাগের প্রতি যেমন জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে, তেমনি আপনারাও বিবেকের নিকট স্বচ্ছ থাকবেন।ৃ ‘জাস্টিস ডিলেইড, জাস্টিস ডিনাইড’- আমরা চাই না এ প্রবাদটি আমাদের বিচার ব্যবস্থায় প্রচলিত থাকুক।”
অনুষ্ঠানে বিচারক ও মামলার সংখ্যায় ভারসাম্য আনার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, “আমাদের বিচার ব্যবস্থার অন্যতম সমস্যা বিচারে বিলম্ব এবং মোকদ্দমার জট। এ বিলম্বের কারণ বহুবিধ। বিচার কার্যে কাক্সিক্ষত গতি আনয়নের জন্য পর্যাপ্ত বিচার কক্ষ, বিচারকের শূন্যপদে নিয়োগ এবং বিচারক ও মোকদ্দমার সংখ্যায় যুক্তিসঙ্গত ভারসাম্য রক্ষা করা আবশ্যক।”
পক্ষপাতহীনভাবে বিচার করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষের শেষ ভরসার স্থল আদালত। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সব ধরনের ভীতি ও প্রীতির উর্ধ্বে থেকে এবং সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও সততা বজায় রেখে বিচারকগণ পক্ষপাতহীনভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করবেন, এটাই সবার কাছে প্রত্যাশিত।”
সহজ ও স্বল্প ব্যয়ে বিচার নিশ্চিত করতে বিচারক ও আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান আইনজীবী আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, “ন্যায় বিচার প্রাপ্তি মানুষের মৌলিক অধিকার। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ দরিদ্রতা, অশিক্ষা ও অসচেতনতার কারণে অনেক সময় মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। মানুষের মৌলিক অধিকার তথা সহজ ও স্বল্পব্যয়ে বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। এ লক্ষ্যে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন ও বিচার অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি সহায়ক শক্তি হিসেবে বিচারক ও আইনজীবীদের কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।”
“মামলা পরিচালনায় সম্মানিত আইনজীবীদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তাই অহেতুক বিলম্ব বা অত্যাধিক আর্থিক চাপের কারণে বিচার কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় এবং বিচারপ্রার্থীরা যাতে ন্যায় বিচার পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”
অনুষ্ঠানে ২০০৫ সালে ১৪ নভেম্বর বোমা হামলায় নিহত ঝালকাঠি জেলা জজ ও দায়রা আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ে এবং মো. সোহেল আহমেদের পরিবারকে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে অনুদান দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ওই দ্ইু বিচারকের স্ত্রীর হাতে দুই লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র তুলে দেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, প্রশাসনিক আপিল ট্রাইবুনালের সদস্য জ্যেষ্ঠ জেলা জজ মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার।