খোলা বাজার২৪,শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫: মাইক্রোসেফালি রোগের কারণে ব্রাজিলের ছয়টি রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এই রোগে ব্রাজিলের ২০ রাজ্যে এরই মধ্যে অন্তত ২৪০০ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ২৯টি শিশুর। তাই দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা- দয়া করে অন্তঃসত্ত্বা হবেন না। কারণ, জাইকা নামের ভাইরাস। মশাবাহিত এই ভাইরাসটি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য। মায়ের থেকে ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটছে সদ্যোজাত সন্তানের শরীরে। এ রোগে অপরিণত মস্তিষ্ক নিয়ে জন্ম হচ্ছে শিশুর। শেষে মৃত্যু, না হয় পঙ্গু-জীবন।
শিশুদের এ দুরাবস্থার হাত থেকে রক্ষা করতেই স্বাস্থ্য ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই কঠোর ঘোষণা। উত্তর-পূর্ব ব্রাজিলের অবস্থা খুবই খারাপ। উত্তর-পূর্বেই প্রথমে সীমাবদ্ধ ছিল রোগটি। কিন্তু পরে রিও ডি জেনেইরো, সাও পাওলোতেও সদ্যোজাতদের মাইক্রোসেফালি ধরা পড়ে। মাইক্রোসেফালি হচ্ছে এক ধরনের স্নায়ুরোগ। অপরিণত মস্তিষ্ক নিয়ে জন্ম হয় শিশুর। শরীরের অন্য অংশের তুলনায় মাথা অনেক ছোট হয়। বয়স বাড়লেও মাথার খুলি বাড়ে না। কিন্তু বাড়তে থাকে মুখমন্ডল।
দেহের স্বাভাবিক বাড়-বৃদ্ধি ঘটে না। কথা বলার ক্ষমতাও তৈরি হয় না। বহু ক্ষেত্রে মৃত্যু হয় শিশুটির। ব্রাজিলে এ পর্যন্ত সব শিশুরই মৃত্যু হয়েছে। জাইকার প্রথম সন্ধান মেলে ১৯৪৭ সালে আফ্রিকার উগান্ডায় জাইকা অরণ্যের রিসাস বাঁদরের শরীরে। মানুষের দেহে এটি পাওয়া যায় ১৯৬৮ সালে। তা ছিল নাইজেরিয়ায়। এর পর একে একে তানজানিয়া, মিশর, সিয়েরা লিওন, গ্যাবন আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে খোঁজ মিলতে থাকে ভাইরাসটির। ক্রমে আফ্রিকা থেকে এশিয়া। ভারত, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, তাইল্যান্ড, ভিয়েতনামেও সংক্রমণ ঘটে। এভাবে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা দায়ী করেন এডিস মশাকে।
২০০৭ সালে জাইকা ভয়াবহ আকার ধারন করে। ফিলিপিন্সের কাছে ইয়াপ দ্বীপপুঞ্জে অন্তত ১১ হাজার বাসিন্দা আক্রান্ত হয় জাইকা ভাইরাসে। ২০১৩ সালে এটির দেখা মেলে তাহিতি দ্বীপ ও পলিনেশিয়ায়। ওই সময় আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ২৮ হাজার।