রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫: নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির দিনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আদালতে যাবেন না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ এম আমিনুল ইসলামের আদালতে সোমবার দুদকের এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
খালেদার আইনজীবী ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার রোববার সকালে বলেন, “আমরা সময় চেয়ে আবেদন জানাব। ম্যাডাম হাজির হবেন না।”
এই মামলা বাতিলে খালেদার করা আবেদন হাই কোর্ট খারিজ হয়ে গেলে সেই রায় অনুযায়ী গত ৩০ নভেম্বর জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
আদালত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জামিন আবেদন খারিজ মঞ্জুর করে নাইকো মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ২৮ ডিসেম্বর দিন রাখেন।
এরপর গত ৭ ডিসেম্বর হাই কোর্টের দেওয়া সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা। সে বিষয়টি জানিয়েই অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছানোর আবেদন করা হবে বলে তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। পরের বছর ৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এতে অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
মামলা হওয়ার পর খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই দুর্নীতির এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাই কোর্ট, সেই সঙ্গে দেওয়া হয় রুল।
মামলা দায়ের কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। ২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলায় জামিন পান খালেদা।
প্রায় সাত বছর পর চলতি বছর শুরুতে রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয় দুদক। খালেদার আবেদনে রুলের ওপর শুনানি করে গত ১৮ জুন রায় দেয় হাই কোর্ট।
খালেদার করা আবেদন খারিজ করে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হয় ওই রায়ে। সেই সঙ্গে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
খালেদা জিয়া ছাড়া এ মামলার বাকি আসামিরা হলেন- চার দলীয় জোট সরকারের আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম) এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।