খোলা বাজার২৪,রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫: আল্লাহ যেন আমার শত্রুকেও কোনো দিন জেলে না নেন’—দুই মাস আট দিনের জেলজীবন কাটিয়ে এই উপলব্ধি শাহাদাত হোসেনের। জাতীয় দলের পেসার ভুলে যেতে চান জীবনের ওই কালো অধ্যায়। মাঠে ফিরতে চান আবারও।
গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের মামলা থেকে ১ ডিসেম্বর দেড় মাসের জামিন পান শাহাদাতের স্ত্রী। ১২ ডিসেম্বর তিন মাসের জামিন পেয়েছেন শাহাদাত নিজেও। বিসিবির ফিজিও-চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আজ থেকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ১৪ দিনের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হবে তাঁর। প্রয়োজনীয় কিছু ফিটনেস টেস্ট অবশ্য কাল সকালেই করে গেছেন মিরপুরের জিমনেসিয়াম থেকে।
গত জুলাইয়ে ডান হাঁটুর অস্ত্রোপচারের পর পুনর্বাসনপ্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। কিন্তু মাস খানেকের মধ্যেই ঘটে গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের ওই ঘটনা, শাহাদাতের ভাষায় যা ‘দুর্ঘটনা’। বিপিএল দিয়ে মাঠে ফেরার সম্ভাবনা থাকলেও সেটা আর হয়নি। শাহাদাতের আফসোস, ‘ফিজিও বলেছিলেন আমি বিপিএল খেলতে পারব। সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগছে বিপিএল মিস করেছি বলেই।’
মামলা এখনো নিষ্পত্তি না হওয়ায় শাহাদাত ওই ব্যাপারে খুব বেশি কথা বলেননি। তবে মুঠোফোনে ভেসে এল তাঁর খেলায় ফেরার আর্তি, ‘কাজটা ভুল-খারাপ যা-ই হোক না কেন, আমি এ থেকে মুক্তি চাইৃআবারও খেলায় ফিরতে চাই। মেয়েটার ভবিষ্যতের দায়িত্ব নিয়ে আমি ক্ষতিপূরণ দিতেও প্রস্তুত আছি।’
জেলে কয়েদিদের মধ্যে অনেক ভক্ত-শুভাকাক্সক্ষী পেয়েছেন শাহাদাত। মাঝে মাঝে টেপ টেনিসে ক্রিকেট খেলতেন তাঁদের সঙ্গে, ‘ওখানে অনেকেই ভালো ক্রিকেট খেলে। ক্রিকেট আর ক্রিকেটারদের ভক্ত তাঁরা। একজন আমাকে রুবেলের দেওয়া জাতীয় দলের একটা টি-শার্ট দেখাল। রুবেল যখন জেলে ছিল তখন নাকি তাকে সেটা গিফট করেছে।’
যত ভক্ত-শুভাকাক্সক্ষী পরিবেষ্টিতই থাকুন, আর সবার মতো শাহাদাতের কাছেও জেল একটা অভিশপ্ত জায়গা, ‘এটা এমন এক জায়গা যেখান থেকে আপনি আপনার পরিবারেরও কোনো খবর পাবেন না। সবচেয়ে খারাপ লাগত সন্ধ্যায় ৬টায় যখন সেলে ঢুকিয়ে তালা মেরে দিত। অনেক বড় একটা রুমে আমরা পাঁচজন ছিলাম। তবু ভালো লাগত না।’
জেলে সবচেয়ে বেশি অভাব অনুভব করেছেন এক বছর বয়সী একমাত্র সন্তানের। তারপরই একটা জিমনেসিয়ামের, যা থাকলে ফিটনেসটা আরও ভালোভাবে ধরে রাখতে পারতেন বলে বিশ্বাস শাহাদাতের। অবশ্য শাহাদাতের ফিটনেসের তারপরও খুব একটা অবনতি হয়নি। দুই মাস আট দিনে বরং ওজন কমেছে ১০ কেজির মতো।