Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

45খোলা বাজার২৪,রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫: ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পণ্য খালাসে বিলম্বের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকেরা। তাঁরা বলছেন, পোশাক তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের আমদানি পণ্য বুঝে পেতে দেরি হওয়ার কারণে তা রপ্তানিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী বোতাম, জিপার, প্রাইস ট্যাগ, সিকিউরিটি ট্যাগসহ বিভিন্ন পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদারের পর বিমান কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের মধ্যে একধরনের সমন্বয়হীনতা তৈরি হয়েছে। এ কারণে এসব আমদানি পণ্য খালাসে বিলম্ব হচ্ছে। আগে যেখানে দিনে দিনে পণ্য খালাস হতো, সেখানে এখন ১০-১৫ দিন লাগছে। এতে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে পোশাক শিল্পমালিক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে পণ্য আমদানির সঙ্গে যুক্ত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের লোকেরা নিজেরা কার্গো ভিলেজ থেকে মালপত্র খুঁজে বের করে কাস্টমসের প্রক্রিয়া শেষ করে পণ্য খালাস করে আনতেন। কিন্তু সম্প্রতি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করায় এই কাজটি করছেন বিমানের নিজস্ব কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা। তাতেই বিপত্তি। বিমানের লোকবল-সংকটের কারণে পণ্য খালাসে বিলম্ব হচ্ছে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে আমদানি পণ্য হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
এ বিষয়ে বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত বিমান কর্তৃপক্ষের মহাব্যবস্থাপকের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের সংগঠন ঢাকা কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ ফরিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত এক মাসে বিমান দেড় শ লোডার নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু তারা সময়মতো পণ্য খুঁজে বের করতে পারছে না। আবার আমাদের লোকজনকেও ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে প্রতিদিনই আমদানি হওয়া পণ্যের স্তূপ বাড়ছে।’ তিনি আরও জানান, চলতি মাসের শুরু থেকে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এদিকে বিজিএমইএর সভাপতি বলছেন, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষ যত আইন করুক, তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সে জন্য সময়মতো পণ্য পাওয়া যাবে না, তা হতে পারে না। কারণ, জরুরি প্রয়োজনেই দ্রুত পণ্য পাওয়ার জন্য মূলত আকাশপথে আমদানি করা হয়। দেশে আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব পণ্য বুঝে পেতে চাই। এত দিন সেটিই হয়ে আসছিল। কারণ, সময়মতো পণ্য বুঝে না পেলে তাতে উৎপাদনে বিলম্ব ঘটে।’
গত দুই সপ্তাহে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে বলে অভিযোগ করেন সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘অবস্থা এমন হয়েছে যে বিদেশ থেকে ২০ কার্টন পণ্য এলে কয়েক দিন খোঁজাখুঁজির পর হয়তো আমাদের ১৫ কার্টন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাকিটা পরে দেওয়া হবে বলা হচ্ছে। তবে কাগজে লিখে নেওয়া হচ্ছে পুরো পণ্য বুঝিয়া পাইলাম।’
বিজিএমইএর সভাপতি আরও অভিযোগ করেন, ‘বিমানবন্দরে খোলা আকাশের নিচে আমদানি পণ্য দিনের পর দিন ফেলে রাখা হচ্ছে। এতে অনেক সময়ই পণ্য চুরি ও নষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটছে।’