Mon. Aug 18th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

50খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ : গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলার রায় জানা যাবে বৃহস্পতিবার।
তিন বছর আগে দায়ের হওয়া এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে সোমবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহম্মেদ রায়ের দিন ঠিক করে দেন।
সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে আসামি পক্ষ। আসামি পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল, ফারুক আহমেদ ও জসিম উদ্দিন।
এর আগে এ মামলায় বৃহস্পতিবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ; রোববার থেকে শুরু হয় আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক।
গত ৫ নভেম্বর দ্রুত নিষ্পত্তির এ মামলা ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
রাজীব হত্যার পর গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী, ব্লগার, লেখক-প্রকাশক মিলে ছয় জনকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এর আগে এ ধরনের হামলার শুরু হয় ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্র“য়ারি; লেখক-অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকে দিয়ে, যিনি পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গত ১১ বছরের এসব হত্যাকাণ্ডের মধ্যে প্রথম বিচার শেষে রাজীব হত্যা মামলার রায় হতে যাচ্ছে।
২০১৩ সালে শাহবাগ আন্দোলন শুরুর দশম দিনে ১৫ ফেব্র“য়ারি রাতে রাজধানীর পল্লবীতে নিজের বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রাজীবকে।
এঘটনায় রাজীবের বাবা ডা. নাজিম উদ্দিনের করা মামলার তদন্তে ধর্মীয় উগ্রবাদীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে উঠে আসে।
তদন্ত শেষে গত বছরের ২৮ জানুয়ারি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি মো. জসীমউদ্দিন রাহমানীসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণ।
বাকিরা হলেন- নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ রানা, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস বিভাগের বহিষ্কৃত ছাত্র সাদমান ইয়াছির মাহমুদ, ফয়সাল বিন নাঈম দীপ, এহসান রেজা রুম্মান, মাকসুদুল হাসান অনিক, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজ।
এদের মধ্যে মামলার প্রধান আসামি রেদোয়ানুল আজাদ রানা ছাড়া সবাই কারাগারে আছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, জসীমউদ্দিন রাহমানী ঢাকার মোহাম্মদপুরে দুটি মসজিদে জুমার খুতবায় ধর্মের বিরুদ্ধে লেখে এমন ব্লগারদের হত্যার ফতোয়া দিতেন। অন্য আসামিরা সবাই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং তারা ওই খুতবা শুনতেন। এভাবে তাদের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি হয়।
জসীমউদ্দিনের লেখা বই পড়ে এবং সরাসরি তার বয়ান ও খুতবা শুনে বাকি আসামিরা ‘নাস্তিক ব্লগারদের’ খুন করতে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত হন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ব্লগার রাজীব খুন হন। রাহমানকে ওই হত্যাকাণ্ডে উৎসাহদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পেশায় স্থপতি রাজীব ব্লগ লিখতেন ‘থাবা বাবা’ নামে, যেখানে ধর্মান্ধতা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতাকারীদের বিপক্ষে লিখতেন তিনি।
আসামিদের মধ্যে জসীমকে ২০১৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয় তার আগে মার্চ থেকে অগাস্টের মধ্যে।
মুফতি জসীমের উসকানিমূলক খুতবার বিষয়টি ছাত্রদের জবানবন্দিতেও উঠে এসেছে।
গত ১৮ মার্চ আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে এ মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করে আদালত।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৫৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন বিচারক।

অন্যরকম