খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫: তেত্রিশ কোটি নতুন পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের ‘হাতের নাগালে’ পৌঁছে গেছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, এখন কেবল উৎসবের অপেক্ষা।
বছরের প্রথম দিন পাঠ্যপুস্তক উৎসবের মধ্য দিয়ে সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর হাতে এসব বই বিতরণের সব আয়োজনও শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে নাহিদ বলেন, “আগামী ১ জানুয়ারি সারাদেশে পাঠ্যপুস্তক উৎসব পালন করা হবে। ওইদিন দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খেলা থাকবে, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ করা হবে।”
এবার প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৬০টি বই এবং বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করবে সরকার। ২০১০ সাল থেকে সরকার শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করছে।
এবার মোট চার কোটি ৪৪ লাখ ১৬ হাজার ৭২৮ শিক্ষার্থীর জন্য ২৯১টি বিষয়ের নতুন বই ছাপানো হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
আগামী ৩১ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনামূল্যের বই বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
প্রাথমিকের বই ছাপানোর কাজ এবার একটু দেরিতে শুরু হয়েছিল জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কিছু সমস্যা থাকলেও প্রাথমিকের সব বই ছাপানো শেষ হয়েছে, উপজেলা পর্যায়েও এসব বই পৌঁছে গেছে।
“আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিয়ে বলছি, আমাদের সব বই ছাপা সম্পন্ন হয়ে গেছে। সব বই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
“আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করছি, আমাদের বই যথাসময়ে পৌঁছে গেছে।”
শিক্ষামন্ত্রী জানান, পাঁচ শতাংশ বই সব সময় সংরক্ষণ করা হয়। ওই বইগুলো কোথাও কোথাও যেতে দেরি হলেও বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক বই চলে গেছে।
শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে পাঠ্যপুস্তক উৎসবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদদের অংশ নেওয়ার অনেুরোধ জানান মন্ত্রী।
ঢাকার গভার্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল মাঠে ১ জানুয়ারি সকাল ৯টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং একই দিন সকাল ১০টায় মিরপুরের ন্যাশনাল বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠ্যপুস্তক উৎসব করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিনামূল্যের বইয়ের কাগজ ও ছাপার মান খারাপ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
বেতন বৈষম্য নিরসন কমিটির সভা হবে
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার বিষয়ে বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি শিগগিরই দ্বিতীয় সভায় বসতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন এ কমিটির সদস্য শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ।
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে অর্থ সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক আয়োজন করতে বলেছি। তিনি একমত হয়েছেন।”
কমিটির সভা আহ্বান নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলবেন জানিয়ে নাহিদ বলেন, “বৈঠক আলোচনা করে কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় সে উদ্যোগ আমরা নেব।
বেতন কাঠামোর বৈষম্য নিরসনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি চলতি মাসের মধ্যে মেনে না নিলে একযোগে সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই হুমকি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “এ পরিস্থিতি চলতে পারে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি-দাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।