Fri. Mar 14th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

39খোলা বাজার২৪,বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫: বস্তি উদ্ধার করে ভারতে নির্মিত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দামি বাড়ি। ১৬০০ কোটি টাকার বাড়িটির মালিক ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানি। মুম্বাই শহরের ২৭ তলা বাড়িটিতে পার্ক করা যাবে ১৬০টি গাড়ি। পরিচর্যার জন্য আছে ৬০০ সদস্যের বিশাল কর্মী বাহিনী। এ ছাড়াও রয়েছে বলরুম, সিনেমা হল, সুইমিংপুল ও ৫০ পিসের সোনার ডিনার সেট।
বাড়িটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে দুই বিলিয়িন মার্কিন ডলার বা ১৬শ’ কোটি টাকা। বাড়িটি দক্ষিণ মুম্বাইয়ের আল্টামাউন্ট রোডে।
পর্তুগাল ও স্পেনের পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগরে আনতিল্লা নামের একটি দ্বীপ ছিলো। হোমার ও হোরাসের লেখায় আনতিল্লা দ্বীপের উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে দ্বীপ আনতিল্লা আজ শুধুই রূপকথা। বর্তমানে এই দ্বীপের কোনো হদিস নেই।
মুকেশ আম্বানি রূপকথার এই দ্বীপের নামেই তার স্বপ্নবাড়ির নাম দিয়েছেন আম্বানি। হারিয়ে যাওয়া দ্বীপের নামে কেন তিনি বাড়ির নাম দিয়েছেন তার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
আনতিল্লার উ”চতা ৫৭০ ফুট। স্বাভাবিক পরিমাপে এ উ”চতায় ৬০ তলা ভবন তৈরি করা যাবে। তবে আম্বানি তৈরি করেছেন মাত্র ২৭ তলা। অর্থাৎ প্রতিটি সিলিংএর উ”চতা স্বাভাবিকের প্রায় দ্বিগুণ।
বাড়িটির টপ ফ্লোরে তিনটি হেলিপ্যাড আছে। আছে চারতলার ঝুলন্ত বাগান। এই বাগানের মাধ্যমেই আনতিল্লাকে শীতল রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছয় তলায় কার পার্কিং। সেখানে এক সঙ্গে ১৬০টি গাড়ি রাখা যাবে। আনতিল্লার পরিচর্যার জন্য ৬০০ জনের এক বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়োজিত আছে।
তবে আম্বানি পরিবারের সদস্য সংখ্যা মাত্র ছয় জন। স্ত্রী নিতা আম্বানি, মেয়ে ইশা আম্বানি, দুই ছেলে আকাশ আম্বানি ও অনন্ত আম্বানি এবং মা কলিলাবেন আম্বানিকে নিয়ে মুকেশ আম্বানির পরিবার।
আনতিল্লায় ৫০ আসনের একটি সিনেমা হল, সুইমিংপুল, বলরুম, হেলথ ক্লাব, ইয়োগা স্টুডিও আছে। বাড়িটিতে লিফটের সংখ্যা মাত্র ২১টি! আনতিল্লা আটমাত্রার ভূমিকম্প সহ্য করতে পারবে। বলা হয়, বোমা বিস্ফোরণেও ধবংস করা যাবে না আনতিল্লাকে। বাড়িটির আসবাবপত্র সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। তবে বাড়িটিতে স্বর্ণের তৈরি ৫০ পিসের একটি ডিনার সেট আছে।
আনতিল্লার নকশা করেছেন, আমেরিকার বিখ্যাত স্থপতি পারকিন্স এবং উইল। বাড়িটির কাজ চলে স্টারলিং ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটেন্সি প্রাইভেট ফার্মের অধীনে। নির্মাণ কাজ করেন লেইটন হোল্ডিংস। বাড়িটির চারপাশে সবুজ পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।
বাড়িটি তৈরি করতে সময় লেগেছে সাত বছর। ২০১০ সালে বাড়িটি তৈরি সম্পন্ন হয়। ওই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আনতিল্লার উদ্বোধন করা হয়।
আনতিল্লা সম্পর্কে কথা বলতে আম্বানি আগ্রহ দেখাননি। তিনি মনে করেন, আনতিল্লা তার ব্যক্তিগত বাড়ি। এটি নিয়ে জন সমক্ষে আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই।
আম্বানির স্ত্রী নিতা বলেন, ‘আমরা ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে একটি ক্রিকেট টিম কিনেছি, চারশ শয্যার হাসপাতাল তৈরি করেছি, চারশ একর জমির ওপর ১২ হাজার মানুষ বাস করতে পারে এমন একটি মডেল টাউন নির্মাণ করেছি, বিশ্বমানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও তৈরি করেছি। এসব নিয়ে কারো কোনো আগ্রহ নেই। সবাই আনতিল্লা সম্পর্কে জানতে চায়।’
ফের্বস ম্যাগাজিন এক জরিপে আনতিল্লাকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি বাড়ির তকমা দিয়েছে। ফোর্বস আনতিল্লাকে ম্যানহাটনের গ্রাউন্ড জিরোর কাছে অবস্থিত ৫৭ তলা বিজনেস সেন্টারের সাথে তুলনা করেছে। এই সেন্টারটিতে ১.৭ বিলিয়ন স্ক্যয়ার ফিট অফিস স্পেস রয়েছে। ফোর্বস এর মতে, এই বিজনেস সেন্টারের চেয়েও আনতিল্লা বেশি দামি।
মজার একটি খবর হলো, আনতিল্লাকে ‘কৃশ থ্রি’ সিনেমাতে দেখানো হয়েছে। অনেকেরই দৃষ্টি হয়তো ‘কৃশ থ্রি’র সুবাদে আনাতিলিয়াকে খুঁজবে।
তবে মুকেশ আম্বানির স্বর্গীয় বাড়ি আনতিল্লার বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ আছে, বস্তি উচ্ছেদ করে সেই স্থানে বাড়িটি হয়েছে বলে অভিযোগটি প্রচলিত। রিলায়েন্স কোম্পানির মালিক মুকেশ আম্বানি এতো খরচ করে বাড়িটি নির্মাণ করেছেন- তাহলে তার মোট সম্পদের পরিমাণ কতো জানতে ইচ্ছে করছে তো? তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২৭ বিলিয়ন ডলার। (অনলাইন)