Fri. Mar 14th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

44খোলা বাজার২৪,বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫: নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভা নির্বাচনে একটি কেন্দ্র দখল করে ব্যালটে সিল মারার ঘটনায় ভোটগ্রহণ স্থগিতের পর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে মাধবদী পৌরসভার ফজলুল করিম কিন্ডারগার্টেন স্কুল কেন্দ্রে এ ঘটনায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নজরুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী হাজী মোশাররফ হোসেন এবং কাউন্সিলর প্রার্থী ওবায়দুর রহমান টিটুর সমর্থকরা কেন্দ্র দখলে নিয়ে ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরার চেষ্টা করেন। পরে তারাই সেখানে হামলা ও ভাংচুর চালায়।
ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণার পর নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “যেভাবে হামলা হলো- আমি তো মরেই যাইতাম।”
ফজলুল হক কিন্ডারগার্টেন স্কুলের একজন কর্মচারী বলেন, “আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা আইয়া নিজের হাতে সিল মারছে। এইটা নিয়ে মারামারি লাগছে।”
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেন্দ্রে জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ হাসান ও পুলিশ সুপার আমেনা বেগমের উপস্থিতিতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে সেখান থেকে আরেকটি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
বেলা পৌনে ১২টার দিকে দুই কর্মকর্তা সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার সময় ৫০ গজ দূরে আরও দু’টি ককটেল ফাটানো হয়।
এদিকে নরসিংদি পৌরসভা নির্বাচনেও নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরাও দুটি কেন্দ্র ‘দখল’ করে ব্যালটে সিল মেরেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানানোর বিষয়টি প্রাক্রিয়াধীন।”
অবশ্য পুলিশ দাবি করেছে, নরসিংদী পৌরসভায় কোনো ‘সমস্যা’ হয়নি।
সকালে পুত্রবধূকে সঙ্গে করে নরসিংদী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভোট দিতে আসা ফাতেমা বেগম (৬০) নামের এক নারীর সঙ্গে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদকের কথা হয়।
তিনি বলেন, “ভোট ভালো হইতেসে। ভোট দিয়া আইলাম, কোনো সমস্যা নাই।”
নরসিংদী শহরের একটি সিনেমা হলের মালিক মো. হেলাল হোসেনও (৫৫) ‘সুন্দরভাবে’ ভোট চলার কথা বলেন।
এ পৌরসভায় মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামরুজ্জামন এবং ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী এস এম কাইয়ুম। পরস্পরের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি’ দেখানোর অভিযোগ এনেছেন তারা।
মোবাইল ফোন প্রতীকের প্রার্থী কাইয়ুম বলেন, “কামরুজ্জামানের লোকজন গতকাল রাত ১০টার দিকে ভেলানগর কেন্দ্রের বাইরে আমার প্রধান এজেন্ট রানা ভান্ডারিকে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দিয়েছে। ব্রাহ্মন্ডি বয়েজ স্কুল কেন্দ্রে পোস্টার লাগানোর সময় রিপন নামে আমার আরেক কর্মীকে হুমকি দিয়েছে। প্রচুর অস্ত্রধারী লোকজন কামরুজ্জামানের পক্ষে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, আমার সমর্থকদের ভয় দেখাচ্ছে।”
পাল্টা অভিযোগ করে কামরুজ্জামান বলেন, “যে অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে করা হয়েছে তা নির্জলা মিথ্যাচার। উল্টো আমার লোকজনকে ভয় দেখানোর জন্য কাইয়ুম শহরের বাইরে থেকে সন্ত্রাসী এনে বিভিন্ন স্থানে রেখে ব্যাবহার করছে।”
ভোট কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে বিএনপির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম সোহেল বলেন, “ভোটের কথা আর কি বলব! ভেলানগর ও মহিলা কলেজ কেন্দ্রে সরকার দলীয় প্রার্থীর লোকজন ব্যালট পেপারে সিল মারছে।”
পৌর নির্বাচন প্রভাবিত করতে ‘সন্ত্রাসী আনার’ অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জেলার পুলিশ সুপার আমেনা বেগম বলেন, “বাইরের কিছু লোকজন এসেছিল। আমরা ওদের নোটিশ দিয়েছি। ইতোমধ্যে তারা চলে গেছে। তাদের আবার দেখা গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।