খোলা বাজার২৪, রবিবার, ৩ জানুয়ারি ২০১৬: যত নষ্টের মূল কি না সব ডিজেল গাড়ি! অথচ, দূষণ না কমালেও নয়। না হলে, কীভাবে রক্ষা পাবে ফুসফুস! আর, কীভাবে-ই-বা রোধ করা যাবে অকাল মৃত্যু! যে কারণে, পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দূষিত শহর হিসেবে, শেষ পর্যন্ত কিছু করে দেখাল দিল্লি! আর, এ ভাবেই, শুক্রবার গভীর রাতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিলেন ‘লজ্জা-র শিল্পী’ তসলিমা নাসরিন।
শুক্রবার, পয়লা জানুয়ারি থেকে দিল্লিতে চালু হয়েছে সেখানকার আম আদমি পার্টি (আপ) পরিচালিত সরকারের জোড়-বিজোড় নীতি। আপাতত, আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই নীতির প্রয়োগ হবে বলে জানানো হয়েছে। এবং, আইন মানা না হলে জরিমানা দিতে হবে দু’ হাজার টাকা। অথচ, এই জোড়-বিজোড় নীতির পক্ষে এবং বিপক্ষে কম নেই বিভিন্ন মহলের বিভিন্ন ধরনের জোর অথবা জোরহীন মতামত। একই সঙ্গে, কোনও কোনও মহল যেমন স্বাগত জানাচ্ছে। তেমনই, কোনও কোনও মহল আবার জোড়-বিজোড়ের বিরোধিতাও করছে।
তবে, লেখিকা তসলিমা নাসরিন এখন অবশ্য জোড়-বিজোড়ের পক্ষে। এবং, শুক্রবার গভীর রাতে তিনি তাঁর ফেসবুকে এমন মন্তব্য করেছেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত শহরটি অন্তত কিছু একটা করেছে দূষণ কমানোর জন্য। অভিনন্দন প্রাপ্য। ’ জোড়-বিজোড় নীতি অনুযায়ী, জোড় তারিখে দিল্লির রাস্তায় চালানো যাবে জোড় সংখ্যার নম্বর প্লেটের গাড়ি। তেমনই, বিজোড় তারিখে চালানো যাবে বিজোড় সংখ্যার নম্বর প্লেটের গাড়ি। আপ পরিচালিত সরকারের এই ধরনের নীতির বিরোধিতা করেনি আদালত-ও।
তবে, বিভিন্ন মহলের বিভিন্ন ধরনের মতামতের জেরে, শেষ পর্যন্ত এই জোড়-বিজোড় নীতির রূপায়ণ সফল হবে কি না, সেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দিল্লির আপ সরকার কার্যত আশঙ্কা-ও এড়িয়ে থাকতে পারেনি বলে প্রকাশ পেয়েছে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব হচ্ছে বলেও প্রকাশ পাচ্ছে। এবং, আপাতত এই ধরনের স্বস্তির পরিবেশে, জোড়-বিজোড়ের পাশে থাকার-ই বার্তা দিয়েছেন তসলিমা নাসরিন। শুক্রবার গভীর রাতে তিনি তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে এমনই মন্তব্য করেছেন, ‘আজ বিকেলে দিল্লির নীতি মার্গের রাস্তা দেখলাম ফাঁকা। জোড়-বিজোড় ফর্মুলা ভালো কাজ করছে বৈকি। আজ বিজোড় নম্বরের গাড়ি চলেছে। কাল জোড় তারিখে জোড় নম্বরের গাড়ি চলবে। জোড়-বিজোড়ে যাঁদের মিল পড়ছে না, তাঁরা মেট্রোয় আর বাসে চড়বেন। অথবা, শেয়ারে গাড়ি চড়বেন, মুখ্যমন্ত্রীর মতো। অথবা, সাইকেল চালাবেন। ’
একই সঙ্গে ‘লজ্জা-র শিল্পী’র এমন মন্তব্য, ‘ডিজেল গাড়িগুলিই সব নষ্টের মূল। ওই গাড়িগুলিকে চির বিদায় জানাতে পারলে ভালো হতো। আজ সন্ধ্যায় ইন্ডিয়া গেটের কাছে ভিড় ছিল। সে মানুষের ভিড়, গাড়ির নয়। আশা করছি সোমবার থেকেও রাস্তাঘাট শান্ত থাকবে। দূষণ না কমালেই নয়। ফুসফুসের রোগে তা না হলে অকালে মরবে সবাই। ’ তবে, শেষ পর্যন্ত দিল্লির আপ সরকারের জোড়-বিজোড় নীতি জারি থাকবে কি না। এই নীতির জেরে দিল্লির বায়ু দূষণের পরিমাণ সেভাবে কমানো সম্ভব হবে কি না। এমন বিভিন্ন বিষয়ে এখনও খোদ দিল্লির-ই বহু আম আদমির মনে রয়ে গিয়েছে বহু প্রশ্ন এবং সংশয়। খবর- কলকাতা