খোলা বাজার২৪, রবিবার, ৩ জানুয়ারি ২০১৬: মাত্র ১২ বছর বয়স তার। শ্রীলঙ্কার মেয়েটির জন্ম দুবাইয়ে। আর তার হাতেই লেখা হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রিকেট ইতিহাসের নতুন অধ্যায়। মেয়েদের ক্রিকেটে আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) প্রতিনিধিত্ব করা সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় এই মেয়ে। আসলে ১২ নয়, ইসিবির প্রতিনিধিত্ব করতে দলে সুযোগ পাওয়ার সময় মেয়েটির বয়স ছিল মাত্র ১১! ২০১৪ সালে প্রথম গাল্ফ কাপে সে খেলার সুযোগ পায়। কাভিশা কুমারি সেই থেকে আরব আমিরাত দলের সদস্য। দুই দশক আগে কাভিশার বাবা জগথ কুমারা শ্রীলঙ্কা থেকে যান আরব আমিরাতে। স্কুল পর্যায়ে ও চাকরির সূত্রে ক্রিকেট খেলেছেন তিনি।
তার কাছেই ক্রিকেটে হাতে খড়ি মেয়ে কাভিশার। “আমার বাবাই আমার অনুপ্রেরণা।” কাভিশা বলে, “আমার টেকনিক ঠিক করে দেন তিনি, আমাকে কোচিংও করান।” বাবা কুমারা জানালেন, “প্রত্যেক বিকেলে সে আমার সাথে টেনিস বলে ঘণ্টা খানেক অনুশীলন করতো।” কাভিশা ব্যাডমিন্টন, ভলিবল ও থ্রোবল খেলতেও পছন্দ করে। কিন্তু তার মধ্যে ক্রিকেটের প্রতিভা খুঁজে পান বাবা। তাই শুধু ক্রিকেট খেলতেই উৎসাহিত করেন। শুরুতে ক্রিকেট সময় কাটানোর খেলা হলেও এটাকে কাভিশা এখন গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। শারজা ক্রিকেট কাউন্সিলে সপ্তাহে চারদিন অনুশীলনে যায়। মাত্রই গ্রেড এইটের ছাত্রী কাভিশা। প্রথমবারের মতো আমিরাতের দলে সুযোগ পেয়ে যেন চাঁদ হাতে পেয়েছিল কাভিশা, “আমি সত্যি রোমাঞ্চিত ছিলাম।
আমিরাত দলে খেলা আমার একটা স্বপ্ন ছিল। মজা হয়েছে অনেক। সিনিয়র খেলোয়াড়দের কাছ থেকে শিখেছি।” সতীর্থরা সব অন্তত দ্বিগুন বড় ছিল কাভিশার। গাল্ফ কাপে অবশ্য ব্যাট বা বল করার সুযোগ মেলেনি কাভিশার। সহজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বড় সব জয় পেয়েছে আমিরাত। কাভিশা ফাস্ট বোলার হিসেবে শুরু করেছিল। পরে অফ স্পিন শুরু করে। হার্ড হিটিং ওপেনিং ব্যাটার সে। এখন অল রাউন্ডার। গাল্ফ কাপের আগে দুবাই ক্রিকেট সংস্থা প্রথম নারী ক্রিকেট লিগ চালু করে। সেখানে আইসিসি একাডেমির হয়ে এক ম্যাচে ৫০ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলেছে কাভিশা।
শ্রীলঙ্কার ওপেনার তিলকারতেœ দিলশান কাভিশার রোল মডেল। মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠেয় অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপে আমিরাতের প্রতিনিধিত্ব করতে চায় সে। তবে তার বড় স্বপ্নটা আমিরাতকে ঘিরে না। “এখন আমি আরব আমিরাতের হয়ে খেলছি। শ্রীলঙ্কার হয়ে খেলার চেষ্টা করবো-” স্বপ্নটাকে লঙ্কান জাতীয় জার্সিতে দেখে কাভিশা। আর ১১ বছর বয়সেই যে মেয়ে কোনো জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে জানে সে যে ভবিষ্যতের তারকা তাতে কোনো সন্দেহ নেই।