Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

54খোলা বাজার২৪, রবিবার, ৩ জানুয়ারি ২০১৬: আগামী ৮ জানুয়ারি টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুরু হবে ৫১তম বিশ্ব ইজতেমা। এটি বিশ্ব মুসলমানের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েতের প্রথম পর্ব। প্রথম পর্বের ইজতেমায় অংশগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যেই ময়দানে আসতে শুরু করেছেন মুসল্লিরা। অপরদিকে মুসল্লিদের থাকার ও মলমূত্র ত্যাগের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক সেফটি ট্যাংক নির্মাণ এবং কমোট বসানো, বিদ্যুৎ, পানি এবং গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে।
এসব কাজ করতে প্রতিদিন কাকরাইল মসজিদ ও ঢাকার বিভিন্ন মসজিদ থেকে প্রায় ৪শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক আসেন। তারা মুরব্বিদের নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করেন।
এদিকে ইজতেমার পুরো ময়দানে প্যান্ডেল ও মূল স্টেজের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। খিত্তা ৮ ও হালকা ১০৭ নম্বরের সামনে স্থাপন করা হয়েছে এবারের ইজতেমার মূল মঞ্চ। দোতলা স্টেজের নিচে রয়েছে বিশ্রামাঘার ও নিরাপত্তা কর্মীদের অবস্থানের জায়গায়। দ্বিতীয় তলায় থাকবে মূল স্টেজ। সেখান থেকে তাবলীগ জমায়াতের মুরব্বিরা বয়ান করবেন।
ইজতেমা মাঠে মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তুরাগ নদীর ওপর অস্থায়ী ৮টি পল্টুন ব্রীজ স্থাপন করেছেন।
বিশ্ব ইজতেমার তিন দিনের প্রথম পর্ব শুরু হবে আগামী ৮ জানুয়ারি। আখেরী মোনাজাতের মধ্যে এ পর্ব শেষ ১০ জানুয়ারি। ৪ দিন বিরতি দিয়ে ১৫ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। ১৭ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এ বছরের ইজতেমা।
এবারের প্রথম পর্বের ইজতেমায় ১৭টি জেলার তাবলীগ জমায়েতের মুসল্লিরা অংশ গ্রহণ করবেন। এজন্য পুরো প্যান্ডেলকে ২৭টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে।
এগুলোর মধ্যে ঢাকা জেলা ১ থেকে ৬নং খিত্তা, ৭নং খিত্তায় শেরপুর, ৮ ও ১১নং খিত্তায় নারায়ণগঞ্জ, ৯নং খিত্তায় নীলফামারী, ১০ খিত্তায় সিরাজগঞ্জ, ১২ নং খিত্তায় নাটোর, ১৩নং খিত্তায় গাইবান্ধা, ১৪ ও ১৫ নং খিত্তায় লক্ষ্মীপুর, ১৬ ও ১৭ নং খিত্তায় সিলেট, ১৮ ও ১৯ নং খিত্তায় চট্টগ্রাম, ২০ নং খিত্তায় নড়াইল, ২১নং খিত্তায় মাদারীপুর, ২২ ও ২৩নং খিত্তায় ভোলা, ২৪নং খিত্তায় মাগুরা, ২৫নং খিত্তায় পটুয়াখালী, ২৬নং খিত্তায় ঝালকাঠি, ২৭নং খিত্তায় পঞ্চগড় জেলা।
দ্বিতীয় পর্বে ১৬ জেলাকে ২৯ খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১ থেকে ৭নং খিত্তায় ঢাকা জেলারে বাকি অংশ, ৮নং খিত্তায় ঝিনাইদহ, ৯ ও ১১নং খিত্তায় জামালপুর, ১০নং খিত্তায় ফরিদপুর, ১২ ও ১৩ খিত্তায় নেত্রকোণা, ১৪ ও ১৫ নং খিত্তায় নরসিংদী, ১৬ ও ১৮ নং খিত্তায় কুমিল্লা, ১৭ নং খিত্তায় কুড়িগ্রাম, ১৯ ও ২০ নং খিত্তায় রাজশাহী,২১নং খিত্তায় ফেনী, ২২নং খিত্তায় ঠাকুরগাঁও, ২৩নং খিত্তায় সুনামগঞ্জ, ২৪ ও ২৫ নং খিত্তায় বগুড়া, ২৬ ও ২৭ খিত্তয় খুলনা, ২৮নং খিত্তায় চুয়াডাঙ্গা, ২৯ নং খিত্তায় পিরোজপুর জেলা। এবারের ইজতেমায় বিশ্বে ৩৩টি দেশের মুসল্লিরা অংশ গ্রহণ করলেও খোদ গাজীপুরসহ ৩১ জেলার মুসল্লিরা ইজতেমায় অংশ গ্রহণ করতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে তাবলীগ জমায়েতের মুরুব্বি গিয়াস উদ্দিন জানান, তুরাগ তীরে জায়গায় না হওয়া এবারে ৬৪ জেলার মধ্যে ৩৩ জেলার মুসল্লিদের ইজতেমায় আসার অনুমতি দিয়েছেন তাবলীগ জমায়েতের শীর্ষ মুরুব্বিরা। তবে আগামী বছর তারা ইজতেমায় আসতে পারবেন।
এদিকে ইজতেমা উপলক্ষে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সরকারি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলো ইজতেমায় প্রবেশের বিভিন্ন পয়েন্টে মুসল্লিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা দিবেন। এছাড়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও মুসল্লিদের সেবায় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে ইজতেমার সার্বিক প্রস্তুতি দেখতে আগামীকাল ৪ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের ডিআইজি এ কে এম শহিদুল হকসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইজতেমা ময়দানের সর্বশেষ কাজ তদারাকি দেখতে আসবেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের এসএসপি হারুন অর রশিদ।
তিনি আরো জানান, মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তায় ইজতেমা ময়দানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৮ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া র‌্যাব ও পুলিশের সদস্যরা ওয়ার্চ টাওয়ার ও সিসি টিভির মাধ্যমে ইজতেমার ময়দানের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবেন।