খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৪ জানুয়ারি ২০১৬: গণতন্ত্র উদ্ধারের নামে পুড়িয়ে মারার ষড়যন্ত্রের জন্য ৫ জানুয়ারিকে বিএনপির ‘অনুতাপ দিবস’ হিসেবে পালন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের।
সোমবার দুপুরে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “বিএনপির রাজনীতি ও আন্দোলন ভুলের চোরাবালিতে আটকে আছে। এদিন (৫ জানুয়ারি, ২০১৪) তারা গণতন্ত্রকে উদ্ধারের নামে পুড়িয়ে মারার ষড়যন্ত্র করেছে।
“৫ জানুয়ারি তাদের অনুতাপ দিবস পালন করা উচিত। এটাই হবে দলটির জন্য যথার্থ।”
ছাত্রলীগের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির ছিলেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি কাদের।
‘সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদের কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা’য় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে
তিনি বলেন, “তোমরা পরীক্ষাকেন্দ্রিক হও। মানসম্মত শিক্ষা তোমাদের লক্ষ্য হতে হবে।”
অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশে আগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের।
বক্তব্যে যোগাযোগ ও অবকাঠামো খাতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগের কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, এ বছরের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়ক ও মেট্রো রেলের নির্মাণকাজ শুরু হবে।
“বিশ্বব্যাংক আমাদের চোরের জাতি বানাতে চেয়েছিল। আমরা প্রমাণ করেছি, আমরা চোর নই, বীরের জাতি। বাঙালির বীরকন্যা শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন করে তা দেখিয়েছেন।”
পাকিস্তানের থেকে আর্থ-সামাজিক সব সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “শুধুমাত্র পরমাণু বোমায় তারা (পাকিস্তান) এগিয়ে আছে। আর আমরাতো পরমাণু বোমা-ই চাই না।”
ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স।
অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও দীপু মণি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মধ্যে বাহালুল মজনুন চুন্নু, নজরুল ইসলাম বাবু ও লিয়াকত শিকদার উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে পাঁচ দিনব্যাপী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনের সূচনা করে ছাত্রলীগ।
এরপর সকাল ৮টা ১ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে কেক কাটা হয়।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
প্রতিষ্ঠালগ্নে নাইমউদ্দিন আহম্মেদকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
১৯৪৯ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর রাজধানীর আরমানিটোলায় ছাত্রলীগের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে দবিরুল ইসলাম সভাপতি ও মোহাম্মদ আলী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান ও মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এবং আশির দশকের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে।