
খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারি ২০১৬: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,আমরা যে শাসনের মধ্যে রয়েছি তা ফ্যাসিবাদী শাসন। শুধু গণতন্ত্রের মুখোশ পরিয়ে রাখা হয়েছে। হয়েছে। কারো কথা বলার অধিকার নাই। ভিন্নমত পোষণ করলেই মামলা দেওয়া হয় এবং কারাগারে পাঠানো হয়।তাই সব ভেদাভেদ ভুলে অধিকার আদায়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের হলরুমে শুক্রবার সকালে আমারদেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের কারাবন্দিত্বের ১০০০ দিন উপলক্ষে প্রতিবাদী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দিন আহমেদ।
মির্জা ফখরুল বলেন,এটা জাতির জন্য অত্যন্ত দুঃসময় যে, কেউ কথা বললেই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়, জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, আজকে সাংবাদিক সমাজ বিভক্ত। এর কারণ হচ্ছে, এই বিভক্তিটা ঘটাতে পারলেই একটা গোষ্ঠী লাভবান হয়। শওকত মাহমুদ কারাগারে। তিনি সাংবাদিক নেতা ছিলেন, তার জন্য কেউ কথা বলছেন না। বর্তমান সরকার খুব ইফিশিয়েন্টলি গোটা জাতিকে বিভক্ত করে ফেলেছে। এ সুযোগ কোথাও বাদ রাখেনি।
মানুষের কোনো অধিকার নেই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, না বলবার অধিকার আছে, না লেখবার অধিকার আছে, না ভোট দেওয়ার অধিকার আছে। কোনোটাই নেই। সব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সব কিছু শান্ত, ঠান্ডা বাংলাদেশ। এতো বাংলাদেশের চেহারা নয়। বাংলাদেশের মানুষ চিরকাল লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে অধিকার আদায়ের জন্য প্রাণ দিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ করেছে। এই ঠান্ডা স্তব্ধতা স্বাভাবিক নয়।
অধিকারে আদায়ে মানুষ সংগঠিত হচ্ছে’ উল্লেখ করে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘আজকে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেটা হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। সকল মত ও সকল পথকে এখন একটিমাত্র কারণে তাদের অধিকারের প্রশ্নে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে, কথা বলার প্রশ্নে সবাইকে এক হতে হবে। সেই অধিকারকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক ত্রুটি রয়েছে নিঃন্দেহে। আমরা বিরোধীদলে আছি, সেইভাবে হয়তো সফলতা অর্জন করতে পারিনি। যে কথা অনেকেই আজকে এখানে বলেছেন। আন্দোলনে কখনো জয় আছে, কখনো পরাজয় আছে। সব কিছু মিলিয়ে মানুষের যে সংগ্রাম, তার অধিকারের জন্য সেই সংগ্রাম একদিন না একটি জয়ী হবে।মানুষ জেগে উঠছে, মানুষের যে সংগ্রাম এ সংগ্রাম নিশ্চয়ই জয়ী হবে, পরাজিত হতে পারে না’ যোগ করেন ফখরুল।
কারাবন্দি সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান, শওকত মাহমুদসহ রাজবন্দিদের মু্ক্তি দাবি করে তিনি বলেন, আমরা ভয়ংকর পরিবেশের মধ্যে আছি। আমরা পরাজয় বরণ করতে জানি না। আমরা সংগ্রাম করব। আমাদের অধিকারের জন্য সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাব।’
মাহমুদুর রহমানের ১০০০ দিন কারবন্দিত্ব তখনই সার্থক হবে যখন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকে কারাগারে থেকে বের করে নিয়ে আসতে পারি। এটাই হবে আমাদের আজকের শপথ। আসুন আমরা আজকে সেই শপথ নেই। নিজেদের দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে মৌলিক অধিকারগুলো ফিরে পাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হই।
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির বহু নেতাকর্মীকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। ছাত্রদলের কারো কারো পায়ে গুলি করা হয়েছে। তাদেরও আটকে রাখা হয়েছে, চিকিৎসা পাচ্ছে না।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক শফিক রেহমান, কলামিস্ট ফরহাদ মজহার, গণস্বাস্থের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, পেশাজীবী নেতা আনহ আখতার হোসেন, রহুল আমিন গাজী, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, এম এ আজিজ, এম আবদুল্লাহ, ড. মামুন রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কবি আবদুল হাই শিকদার।