
১. শীতকালে সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় অনেকে হুট করে কোনো ধরনের গরম কাপড়-চোপড় ছাড়াই বিছানা ছাড়েন। হঠাৎ এভাবে নিজেকে গরম পরিবেশ থেকে ঠা-ায় নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি শরীর সামলাতে পারে না। ফলÑ হাঁচি, সর্দি, কাশি।
২. বিছানা ছাড়ার সময় অনেকে জুতা খুঁজে না পেয়ে খালি পায়েই শীতসকালে কিছুটা সময় হাঁটতে থাকেন। এর পরিণতি আগেরমতো একই।
৩. শীতসকালে অনেকেই ফজরের নামাজ পড়তে উঠে কিংবা ঘুম থেকে জেগে ওজু বা মুখ ধোয়ার জন্য ঠা-া পানি ব্যবহার করেন। এ পানি নাকে দেওয়া মাত্রই কারও কারও নাকবন্ধ হয়ে যায় এবং শুরু হয় হাঁচি, যা চলতে থাকে সারাদিন কিংবা তার চেয়েও বেশি সময়।
৪. শীতের দিনগুলোয় সারাদিন তেমন বিশেষ ঠা-া পরিবেশ না থাকার কারণে অনেকেই রাতের জন্য গরম কাপড় ও জুতো পরে বের হন না। ফলে দেখা যায়, সন্ধ্যা নামতেই মাথাব্যথা, কানব্যথা, গলাব্যথা, হাঁচি শুরু হয়ে গেছে।
৫. উল্লিখিত স্বাস্থ্যসমস্যাগুলো যাদের আছে, তাদের উচিত অক্টোবর-নভেম্বর থেকেই অ্যালার্জি প্রতিরোধক ওষুধÑ মন্টিলুকাস্ট গ্রহণ শুরু করা। কারণ শীতের সকাল-সন্ধ্যার স্বাস্থ্যসমস্যাগুলো বেশিরভাগই অ্যালার্জিজনিত। এছাড়া যাদের হাঁপানি আছে, তারা স্টেরয়েড জাতীয় ইনহেলার ব্যবহার শুরু করতে হবে শীত আসার আগেই। তবে এসব একজন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ এবং ক্ষেত্রবিশেষে বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে গ্রহণ করা উচিত।
৬. গলাব্যথা যে কারণেই হোক, উষ্ণ পানিতে লবণ দিয়ে দৈনিক ৩/৪বার গরগরা করার বিকল্প নেই। শীতের সকাল ও সন্ধ্যায় বছরের অন্য সময়ের চেয়ে শরীরের দিকে একটু বেশি নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে সকালে ওজু কিংবা মুখ ধুতে গরম পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, দরকার পড়লে গরম পানি পান করতে হবে। নাকে ঠা-া পানি দেওয়া যাবে না। পায়ে মোজা, বিশেষ ধরনের পাদুকা, জুতা, গলায় গলাবন্ধ, মাথায় ক্যাপ ব্যবহারে অভ্যস্ত হতে হবে। এদেশের মানুষ শাড়ি, লুঙ্গি পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কিন্তু শীতের পোশাক হিসেবে এগুলো গ্রহণীয় নয়। শীতে টাইটস কিংবা প্যান্টই উত্তম। শেষ কথা হলো, হঠাৎ করে নিজেকে শীতের সকাল ও সন্ধ্যার ঠা-ায় অরক্ষিত অবস্থায় মেলে ধরা যাবে না। নিতে হবে মাথা থেকে পা অব্দি শীত থেকে রক্ষার প্রস্তুতি। এটি হতে হবে সবার জন্য। তাহলেই দেখা যাবে, সামান্য ওষুধ গ্রহণ করেই শীতে সবাই ভালো আছেন।