Wed. Apr 23rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

6খোলা বাজার২৪,শনিবার, ৯ জানুয়ারি ২০১৬: ভোটারহীন নির্বাচনে’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে ‘দেউলিয়া’ হয়ে এখন বিরোধী জোটে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি জোটের দীর্ঘদিনের সঙ্গী ইসলামী ঐক্যজোট ২০ দল ছেড়ে যাওয়ার দুদিন পর জোটের আরেকটি দলের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই অভিযোগ করেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ছাড়ার ঘোষণা দেন। তবে দলটির এক অংশের নেতারা পাল্টা ঘোষণায় ২০ দলে থাকার কথা জানিয়েছেন।
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী জোটে ভাঙন ধরাতে চাইছে বলে অভিযোগ ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ।
তিনি বলেছেন,ইসলামী ঐক্যজোট কী কারণে বিএনপি জোট ছেড়েছে, তারা তারা জানেন না। তবে বিএনপির ‘অধর্মের’ কারণে কারও ওই জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক।
শনিবার লেবার পার্টির কাউন্সিল অধিবেশনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল বলেন, “যে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে; সেই আওয়ামী লীগকে দেখলে মনে হয়, এটা একটা দেউলিয়া রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে।
“তা না হলে অন্য একটি রাজনৈতিক জোটকে ভাঙার চেষ্টা করত না। কাজ হওয়া উচিত ছিল গণতন্ত্রকে বিকশিত করা; কাজ হওয়া উচিত ছিল গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা; তা না করে আজ রাজনৈতিক দলগুলোকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
বাংলাদেশ বর্তমানে ‘গণতন্ত্রহীন’ অবস্থায় রয়েছে দাবি করে তা ফিরিয়ে আনতে বিভেদ ভুলে দেশপ্রেমিক সব দল ও গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।
রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে লেবার পার্টির কাউন্সিল অধিবেশন উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ‍উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ।
সারাদেশে ৪৪টি সাংগঠনিক জেলা ও মহানগরের দেড় শতাধিক প্রতিনিধি কাউন্সিলে অংশ নিচ্ছেন বলে ১৯৭৪ সালে মাওলানা আবদুল মতিনের নেতৃত্বে গঠিত লেবার পার্টির নেতারা দাবি করেন।
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা পাওয়ার অভিযোগ তুলে ফখরুল বলেন, “কোথাও গণতন্ত্রের আবহাওয়া নেই। সভা করতে পারি না, সমাবেশ করতে পারি না। এমনকি আমাদের অফিসের মধ্যেও আমাদের সভা করতে বাধা দেয়া হয়।”
শুধু বিএনপিই নয়, ভিন্নমতের সবাইর উপরই সরকারের দমন-পীড়ন চলছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
“মাহমুদুর রহমান মান্না বিএনপি করেন না, ২০ দল করতেন না, শুধু ভিন্নমত পোষণের কারণে তাকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এই শাসক দল ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য এই দমননীতি গ্রহণ করেছে।”
ভিন্নমত পোষণ করছে বলেই আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের শাসনাধীনে খুন-দুর্নীতি বেড়ে যাওয়ায় জনগণ দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে বলেও দাবি করেন বিএনপি নেতা।
“এরপর গ্যাস-বিদ্যুত-জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন। ২৬ ক্যাডারের সদস্যরা বেতন বৈষ্যমের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। এরকম একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।”
বর্তমান অবস্থায় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মির্জা ফখরুল।
“আমরা বিস্মিত হই, এখন মিডিয়াতে শুধু খুঁজে বেড়ানো হয় যে বিরোধী দলের ত্রুটি কী? বিএনপির ভুল কী? বিএনপির ত্রুটি, ২০ দলের ভুল থাকতেই পারে। কিন্তু যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে, যারা মানুষের মৌলিক অধিকার-গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, তাদের সম্পর্কে মিডিয়াকে সেভাবে সোচ্চার হতে দেখি না।”
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ‘নষ্ট’ করেছে বলে দাবি করেন দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।
“মানুষ আজ ভোট দিতে পারে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তো পারেইনি, এরপর উপজেলা নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচনেও মানুষ ভোট দিতে পারেনি। সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। সেখানেও মানুষ ভোট দিতে পারবে না।”
“এরকম পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সমস্ত মানুষের, শক্তির একটা ঐক্য দরকার। নিজেদের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে,” বলেন ফখরুল।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে কাউন্সিল অধিবেশনে দলের মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি, সহসভাপতি ফারুক রহমান, আলাউদ্দিন আলী, যুগ্ম মহাসচিব উম্মে হাবিবা রহমান, মাহবুবুর রহমান খালেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান চৌধুরী মুকুল বক্তব্য রাখেন।