খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১১ জানুয়ারি ২০১৬ : এ বছরের মার্চেই প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ রপ্তানি করবে বাংলাদেশ। শনিবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক সেমিনারে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসান এ কথা জানিয়েছেন।
‘চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপরচুনিটিস ফর সাসটেইনেবল গ্রোথ অব দ্য ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত সেমিনারে নাজমুল হাসান বলেন, আমি ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ায় গেলে শুনি ওখানে বেড়ে উঠেছে এমন ছেলেমেয়েরা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি গায়ে দিতে চায়, পতাকা সংগ্রহ করে।
আমি আশ্বস্ত করতে চাই, চার বছরের মধ্যে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পও একই অবস্থানে পৌঁছাবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ রপ্তানির ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে এই মার্চে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স ইউনিভার্সিটির ফিন্যান্স অ্যান্ড ইকোনমিকস বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদ হাসান। ওষুধ শিল্পে অগ্রগতির প্রশংসা করলেও শিল্পটির প্রসারে গবেষণার ঘাটতি থেকে যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
তার মতে, নিত্যনতুন ওষুধ আবিষ্কার করতে না পারলে এ শিল্পের প্রসার বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ২০৩৩ সাল পর্যন্ত নিম্ন আয়ভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পেটেন্ট করা ওষুধ তৈরির অনুমতি পেলেও, যেভাবে দেশ এগোচ্ছে সে সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ নিম্ন আয়ভুক্ত দেশের মধ্যে না-ও থাকতে পারে। সে জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া দরকার বলে মূল প্রবন্ধে মাহমুদ হাসান উল্লেখ করেন।
ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের উপদেষ্টা রহিম বি তালুকদার ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং গবেষকদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর কথা বলেন। সেমিনারে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার জানান, স্বল্পপরিসরে হলেও বেক্সিমকো, স্কয়ার ও ইনসেপটা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করছে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা শনিবার সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন। তাদের অনেকেই দক্ষ জনবল-সংকটের কথা বলেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের প্রধান ইভা রহমান কবির বলেন, উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কী চায় সে নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার।
এদিকে ওষুধ শিল্প সমিতির প্রধান নাজমুল হাসান বলেন, বাংলাদেশের কোর্স কারিকুলামে এখন পর্যন্ত বিশ্ববাজারের জন্য উপযুক্ত বিষয়গুলো পড়ানো হয় না। তবে এ দেশের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করছেন, তারা দেশিয় বাজারের জন্য উপযুক্ত।
একটা সময় দেশের ওষুধের বাজার ছিল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে। এখন শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানই দেশিয়। এখানে বাংলাদেশিরা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। তারা যখন যে বিষয়টি সামনে আসছে, তখনই সেটা দ্রুত শিখে নিচ্ছেন।
সেমিনারে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এখন বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধ স্যানডোজ সিঙ্গাপুর, মিয়ানমারসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে বাজারজাত করছে, বাংলাদেশের ওষুধ অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে বলেও সেমিনারে জানানো হয়।