খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬: সিটি ও পৌর ভোটে প্রতীক নিয়ে বিতর্কের পর এবার ইউনিয়ন পরিষদে নারী প্রার্থীদের জন্য কলম, বই, হেলিকপ্টারের মতো প্রতীক সংরক্ষণ করেছে নির্বাচন কমিশন।
কড়াই, নূপুর, বেগুনের মতো বিদ্যমান প্রতীকগুলো পাল্টে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী জনপ্রতিনিধি পদের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন ১০টি প্রতীক।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার কমিশন সভায় ইউপি নির্বাচন বিধিমালা সংশোধনের খসড়া এই প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে।
এতে চেয়ারম্যান পদে নিবন্ধিত ৪০টি দলের প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্যে ১০টি প্রতীক রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে সংরক্ষিত সদস্য পদে ১০টি ও সাধারণ সদস্য পদে ১০টি সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকা দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ জানান, প্রস্তাবিত নির্বাচনী বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালা নিয়ে কমিশন আলোচনা করেছে। ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে কয়েক দিনের মধ্যেই তা চূড়ান্ত করা হবে।
ইসির আইন শাখার যুগ্মসচিব মো. শাহজাহান বলেন, “ইউপি’র সংরক্ষিত সদস্য পদের প্রার্থীদের জন্য নতুন প্রতীকের তালিকা হয়েছে। বিদ্যমান প্রতীকগুলোয় পরিবর্তন এনে আরও পর্যালোচনা করে নতুন প্রতীক দেওয়া হবে।”
নারী প্রার্থীদের নতুন প্রতীকগুলো হচ্ছে- কলম, ক্যামেরা, তালগাছ, জিরাফ, বই, বক, কলস, মাইক, হেলিকপ্টার ও সূর্যমুখী ফুল।
বিদ্যমান বিধিমালায় ইউপি’র সংরক্ষিত আসনের সদস্য পদের জন্য প্রতীক হিসেবে রয়েছে- কড়াই, গলার হার, চিরুনি, জবা ফুল, নূপুর, পাউরুটি, পেন্সিল কাটার, বিড়াল, বেগুন ও স্কুল ব্যাগ।
চেয়ারম্যান ও সাধারণ সদস্য পদের প্রতীকেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে এবার।
জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক প্রস্তাবিত এসব প্রতীকের বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করলেও চেয়ারম্যান পদে ক্যালকুলেটর ও সাধারণ সদস্য পদে ফুলের টব ‘যুৎসই নয়’ বলে মত দিয়েছেন।
ইসির কার্যপত্রে দেখা যায়, ক্যালকুলেটর পোস্টারে ‘স্পষ্টভাবে প্রদর্শনযোগ্য নয়’ এবং ফুলের টব গ্রামের অনেক লোক ‘কোনোদিন দেখেনি’ বলে মত দিয়েছেন এ নির্বাচন কমিশনার। এ দুটি প্রতীক পরিবর্ত করার পক্ষে বলেছেন তিনি।
২০১৫ সালের ফেব্র“য়ারিতে স্থানীয় সরকারের প্রতিটি নির্বাচনের জন্য আলাদা প্রতীক সংরক্ষণ করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু নারীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকায় ‘গৃহস্থালী সামগ্রী’ রাখায় এপ্রিলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় প্রার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হয় নির্বাচন কমিশনকে।
৩০ ডিসেম্বর পৌর নির্বাচনে নারী প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত কিছু প্রতীক নিয়েও আপত্তি ওঠে। এরপর সেগুলো বাদ দেওয়ার আশ্বাস দেয় কমিশন।
ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, “আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নারী প্রার্থীরা অপমানিত বোধ করেন- এমন প্রতীক রাখা হবে না। অসাবধানতাবশত এতোদিন এ ধরনের প্রতীক রয়ে গেছে।”
আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে ইসির অনুমোদনের পর এ সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট করবে ইসি সচিবালয়। আর দেশের সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন শুরু হবে আগামী মার্চে।