খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬: এক মাস বয়সী শিশুর পেটে মানব ভ্রুণ (বাচ্চা) থাকার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শিশুটি রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে শিশুর পেটে মানব ভ্রুণ থাকার খবর নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকরা। তবে তারা আবারো সুক্ষ্ম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর কথা জানিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানান, গত ২৫ অক্টোবর এক মাস বয়সী এ শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তার ১৬ বছরের কিশোরী মা মুন্নি বেগম। তাদের বাসা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পুরানদহ গ্রামে। মুন্নির স্বামী সোহেল রানা জানান, এক মাস চার দিন আগে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তার স্ত্রী মুন্নি বেগম। বগুড়ার একটি ক্লিনিকে সিজিরিয়ান ছাড়াই শিশুটি জন্ম নেয়ার পর সুস্থ মা ও শিশু বাড়িতে ফিরে যান। জন্মের পর থেকেই শিশুটির পেট কিছুটা ফোলা ছিল। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে স্বাভাবিক বলে জানায়।
সোহেল জানান, দিন দিন পেট ফুলতে থাকায় গোবিন্দগঞ্জের এক চিকিৎসকের পরামর্শে সেখানে আলট্রাসনোগ্রাফি করলে শিশুটির পেটে মানব ভ্রুণের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। পরে ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে গত ২৫ অক্টোবর শিশুটিকে নিয়ে রমেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ভর্তির সময় শিশুটির ওজন ছিল সাড়ে তিন কেজি। ভর্তির পর দিন স্থানীয় পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পুনরায় আলট্রাসনোগ্রাফি করা হয়। তিনি আরো জানান, নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ২০১৪ সালে তার সঙ্গে কিশোরী মুন্নির বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের মাথায় তাদের সংসারে এই ছেলে সন্তান জন্ম নেয়।
এদিকে, চিকিৎসক ডা. মোরশেদ আলী জানান, শিশুটির পেটে ভ্রুণসদৃশ বস্তুর অস্তিত্ব রয়েছে। তবে বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে তিনি সিটিস্ক্যান করার কথা বলেন। সিটিস্ক্যান করার পরই সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, ‘পেটের ভেতরে যাই থাক না কেন, অপারেশনের মাধ্যমে তা অপসারণ করতেই হবে। তবে এ ধরনের ঘটনা বিরল কিছু নয় বলে জানান রংপুর পরমাণু কেন্দ্রের এই পরিচালক। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় সব দেশেই প্রায়শ এ ধরনের ভ্রুণের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এটি নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই।
এদিকে, শিশুর পেটে বাচ্চা থাকার কথা জানাজানি হলে উৎসুক জনতার ভিড় বাড়তে থাকে রমেক হাসপাতালে। শিশুটিকে একনজর দেখার জন্য মানুষ ১৮নং ওয়ার্ডে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। মানুষের ভিড় ঠেকাতে ওয়ার্ডে দায়িত্বরতরা প্রবেশদ্বারে তালা দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছেন।