খোলা বাজার২৪,শনিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬: তারা আরও বলছেন, দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে নানা ধরনের চাপ মাথায় নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সারা দেশে দলীয় ভিত্তিতে অনুষ্ঠেয় ইউপি নির্বাচনে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক চাপ আরও বাড়তে পারে। এদিকে সদ্য সমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে নানা সমালোচনার পর নিজেদের নিরপেক্ষ প্রমাণে ইসি কঠোর অবস্থানে থাকবে বলে জানিয়েছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, পৌরসভা নির্বাচনের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী আইনে অনেক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আশা করছি, সরকার ও প্রার্থীরা সহযোগিতা করলে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া নির্বাচনী মাঠে সব প্রার্থীকে সমান সুযোগ দিতে নেওয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। দলীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আরও সুযোগ দিতে তাদের প্রার্থিতায় কোনো শর্ত রাখা হচ্ছে না। তারা চাইলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, আগামী মার্চের শেষ দিকে প্রায় ৬০০ ইউপিতে ভোট করার ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেছেন, মার্চের শেষ দিকে ইউপি নির্বাচন করতে হবে আমাদের। এ লক্ষ্যে যথাসময়ে তফসিল (ফেব্র“য়ারিতে) দিতে হবে। সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদের ভোট ধাপে ধাপে করা হবে। দলীয়ভাবে চেয়ারম্যান পদ ও নির্দলীয়ভাবে সদস্য পদে ভোট করতে বিধিমালা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
কয়েক ধাপে ইউপি নির্বাচন করার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, আইনের আলোকে নির্বাচনবিধি ও আচরণবিধি চূড়ান্ত করে তফসিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি ইউপির ভোট করতে হবে। উল্লেখ্য, দলীয়ভাবে পৌরসভা ভোটের পর এবার দলভিত্তিক ইউপি নির্বাচন করতে যাচ্ছে ইসি। গত নভেম্বরে এ-সংক্রান্ত আইন সংসদে পাস হয়েছে। আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হবে।
চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী মনোনয়ন দেবে দল। বাকিদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে। নির্দলীয়ভাবে ভোট হবে সদস্য (মেম্বার) পদে। নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ জানান, সংশোধিত আইনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকারের সর্বনিম্ন স্তর ইউনিয়নে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দলীয় প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচন গ্রাম পর্যায়ে হানাহানি বাড়াতে পারে। এ ছাড়া ইসির পক্ষে নিরপেক্ষতা বজায় রাখাও কঠিন হবে। আইন অনুযায়ী পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউপিতে নির্বাচন করতে হয়। এ হিসেবে এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে চার হাজারের বেশি ইউপির মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে। এ জন্য কমিশন সময় হাতে রেখে আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করে মার্চে ভোট গ্রহণ শুরু করতে চায়।
মার্চে ভোট প্রস্তুতি : ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসছে মার্চে প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। প্রয়োজনীয় বিধিবিধান সংশোধনীর কাজ চলছে। নির্বাচন কমিশন আগামী ফেব্র“য়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে উপকূলীয় অঞ্চলের ৭২ উপজেলার প্রায় ৬০০ ইউপিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মার্চের শেষ দিকে ভোট গ্রহণের চিন্তা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে নির্বাচন উপযোগী সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদের তালিকা হাতে পাওয়ার পর সম্প্রতি এ তোড়জোড় শুরু করেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। অনেক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে দশম সংসদ, উপজেলা, সিটি ও পৌর নির্বাচনের পর কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন ইসি এবার ইউপি ভোট করতে যাচ্ছে। ইসির কর্মকর্তারা বলেন, ফেব্র“য়ারিতে এসএসসি পরীক্ষা রয়েছে। এ সময়ে কোনোভাবেই সাধারণ নির্বাচন করা যাবে না। মাঝে ভোট করার সময় রয়েছে মার্চ।
এপ্রিলে শুরু হবে এইচএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষার ফাঁকে উপযুক্ত সময় কখন পাওয়া যাবে তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় এবং প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা পাওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে। উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ওই নির্বাচন ঘিরে অন্তত ৩৫ জন নিহত হন। ২০০৩ সালের ইউপি নির্বাচনে ৭০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিলেন। দলভিত্তিক পৌর নির্বাচনের পর এবার ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে দলীয় ভোট হবে। সদস্য পদ থাকছে নির্দলীয়।