খোলা বাজার২৪,শনিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬: সপ্তাহ দুয়েক আগে জেএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া সোনালীর (১৪) স্বপ্ন ছিল রাজধানীর নামকরা কোনো স্কুলে ভর্তি হওয়া। ভালো ফলাফল করায় সে সুযোগও মেলে তার। তেজগাঁও সরকারি গার্লস স্কুলে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পায় সে।
আনন্দে উদ্বেলিত সোনালী শনিবার সকালে হাসিমুখে হাইকোর্টের সামনের গণপূর্ত অধিদফতর কলোনির বাসা থেকে নতুন স্কুলে ভর্তির উদ্দেশ্যে বের হয়।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সামনের রাস্তাটি পার হওয়ার সময়ই যাত্রাবাড়ী থেকে গাবতলী রুটে (৮ নম্বর) চলাচলকারী দ্রুতগতির একটি বাসের চাপায় সোনালীর সে সোনালী স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটে।
সকাল ৮টার দিকে ঘটা মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সোনালীর। রাস্তাতেই পড়েছিল তার মগজ ও রক্তাক্ত দেহ। পাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল ভর্তির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে আসেন সোনালীর বাবা-মা। মেয়ের নিথর দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। তাদের আর্তনাদে আদালতসংলগ্ন এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোনালীর বাবা জাকির হোসেন বলেন, ‘সেগুনবাগিচার রহিমা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পায় সোনালী। সে তেজগাঁও সরকারি গার্লস স্কুলে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি হতে সকালে বাসা থেকে বের হয়। হাইকোর্টের সামনের রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি বাস (ঢাকা মেট্রো জ ১১-১৩২৮) তাকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলে সে মারা যায়।’
তিনি জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের নাজিরপুর থানার ঝনঝনিয়া গ্রামে। তিনি গণপূর্ত অধিদফতর কলোনি এলাকায় ভাড়া থেকে ঠিকাদারির কাজ করেন।
এদিকে সোনালীর মৃত্যুর খবরে সেগুনবাগিচার রহিমা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহপাঠীরা এসে মৎস ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছে। এতে মৎস্য ভবনের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
ঘটনাস্থল থেকে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব জানান, রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি বাস ওই স্কুলছাত্রীকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদনের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার পর শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা এসে রাস্তায় অবস্থান করেছেন। তাদের বুঝিয়ে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
সার্জেন্ট আমজাদ দ্য রিপোর্টকে জানান, ঘাতক বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছেন।