খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬: বাংলাদেশের নারীদের দিনের কাজে অন্তত ৪০ শতাংশ কাজ পরিবার এবং স্বজনদের পেছনে ব্যয় করেন, কিন্তু তার এসব কাজের কোন মূল্যায়ন হয়না। কিন্তু নারী অধিকার রক্ষা এবং নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে এ ধরণের কাজের মূল্যায়ন করা জরুরী বলে বলছে বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইড। সম্প্রতি বাংলাদেশের দুইটি জেলায় চালানো একটি গবেষণা বলছে, অমূল্যায়িত সেবাখাতে পুরুষদের তুলনায় নারী অন্তত ৪০ভাগ সময় বেশি ব্যয় করেন। কিন্তু তাদের এই কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই। গ্রামাঞ্চলে নারী ও পুরুষ দিনের কতোটা সময় কাজ করেন এই বিষয়ে তুলনামূলক এক গবেষণায় এই তথ্য তুলে এনেছে বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইড।
রান্না-বান্না ও সন্তান লালন-পালন থেকে শুরু করে গৃহের যে সকল কাজ নারীরা করেন সেগুলোকে অমূল্যায়িত সেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় দুটো জেলা, লালমনিরহাট এবং গাইবান্ধায় এই সমীক্ষার চালানো হয়। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা সমন্বয়ক হেলাল উদ্দিন বলছেন, এই দুইটি জেলার এখানকার নারীরা প্রতিদিন প্রায় ছয় ঘণ্টার বেশি সময় এ ধরণের সেবায় সময় ব্যয় করেন। একই কাজে পুরুষরা সময় ব্যয় করেন একঘণ্টার মতো। এসব কাজের মধ্যে রয়েছে শিশুদের লালন পালন করা, রান্না করা, গৃহস্থালি কাজে সময় ব্যয়, বয়স্কদের সেবা করা।
হেলাল উদ্দিন বলছেন, কিন্তু এসব কাজে পরিবারে বা সমাজে স্বীকৃতি পায় না। এমনকি রাষ্ট্রেও এই সেবা বা কাজ মূল্যায়িত হয় না। তিনি বলছেন, অনেক দেশে এসব কাজ বিবেচনা করে একটি হিসাব বের করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এরকম কোন পদ্ধতি চালু হয়নি। তবে কর্মক্ষেত্রে যেভাবে দক্ষ, স্বল্প দক্ষ, অদক্ষ ইত্যাদি বিভাগে ভাগ করে মজুরি নির্ধারণ করা হয়। সেভাবে যদি এই ধরণের কাজের মূল্যায়ন করা হতো, তাহলে প্রত্যেক নারীকে প্রতিদিন অন্তত ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা মজুরি দিতে হতো।
অ্যাকশন এইড কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলছেন, এখন নারীরা বাইরেও কাজ করেন। কিন্তু তাই বলে তার ঘরের কাজ কমেনি। বাইরের কাজের সাথে ঘরের কাজও যোগ হয়ে বরং তার কাজ এখন দ্বিগুণ হয়ে গেছে। একজন নারীর সারাদিনের কাজের অন্তত ৪০ শতাংশ এই কাজে ব্যয় হয়, কিন্তু তার কোন মূল্যায়ন হয়না । কিন্তু নারীর অধিকার রক্ষায় এ ধরণের কাজের মূল্যায়ন করা জরুরী।