খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬: ট্রানজিটের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে সড়ক, রেল ও নৌপথে সংযুক্তি এবং উন্নত দেশগুলোতে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা কাজে লাগিয়ে উত্তর পূর্ব ভারতসহ এসব দেশের বাজার ধরতে চায় ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। এ লক্ষ্য নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে যৌথ বিনিয়োগে শিল্প-স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রতিবেশী দেশটির ব্যবসায়ীরা। তবে সরকারি কিছু নিয়মনীতির বেড়াজালে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বিদেশে বিনিয়োগে পিছিয়ে আছে বলে অভিযোগ শিল্প উদ্যোক্তাদের।
ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছয় বিলিয়ন ডলারের বেশি হলেও এতদিন বাংলাদেশে ভারতীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের যৌথ বিনিয়োগ ছিল হাতেগোনা। তবে ট্রানজিট চুক্তির পর বাংলাদেশে সরাসরি ও যৌথ বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন ভারতীয় শিল্প উদ্যোক্তারা।
এক্ষেত্রে দু’দেশের ভৌগোলিক নৈকট্য এবং বাংলাদেশের সস্তা শ্রমকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদিত পণ্য, উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭টি রাজ্যের পাশাপাশি শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া ৪০টি দেশে রপ্তানি করতে চায় তারা। এতে দু’দেশের বাণিজ্যিক ঘাটতি কমবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
এফবিসিসিআই-এর সভাপতি মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘ধারণাটি হচ্ছে বাংলাদেশকে উৎপাদনের ক্ষেত্র করে এখান থেকে বাংলাদেশের চারপাশে রপ্তানি করা। এবং বাংলাদেশের সাথে যে ৪০টি দেশের শুল্কমুক্ত সুবিধা রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করা। ভারত যদি আমাদের সাথে শিল্পে যুক্ত থাকে তাহলে আমাদের ব্র্যান্ড আমরা পেয়ে যাব।’
সিয়েট একেখান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জ্যোতিব্রত ব্যানার্জি বলেন, ‘সড়ক পথ ব্যবহার করে উৎপাদিত পণ্য দ্রুত চলে যেতে পারবে। উৎপাদন খরচ এখানে কম হবে। বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমবে যদি এ দেশের উৎপাদিত পণ্য ভারতে রপ্তানি করতে পারি। এটাকে একটা আউটসোর্সিং হাব হিসেবে রাখা যেতে পারে।’
এ দেশের ব্যবসায়ীরা মনে করছেন এতে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ব্র্যান্ড তৈরির পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। তবে শিল্প উদ্যোক্তাদের অভিযোগ সক্ষমতা থাকলেও ক্যাপিটাল একাউন্ট আইনসহ সরকারি কিছু নিয়ন্ত্রণের কারণে বাংলাদেশ, ভারতসহ অন্য দেশে সেভাবে বিনিয়োগে করতে পারছে না।
বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘এখন খুবই সীমিত-সুযোগে, একটি সুনির্দিষ্ট বিনিয়োগ যথাযথভাবে বিওআই ও আমাদের অর্থ-মন্ত্রণালয়ে নিয়ে গেলে ওনারা অনুমোদন দিচ্ছেন। আমাদেরকে যথাযথভাবে বলতে হচ্ছে যে, আমি আফ্রিকান কোন একটি দেশে বিনিয়োগ করতে চাই। এখনও কিন্তু এটি সুপরিসরে খুলে দেয়নি সরকার।’
বর্তমানে বাংলাদেশে গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, অটোমোবাইল, ওষুধ, কৃষি ও খাদ্য পণ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ রয়েছে