খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬: প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পর বৈঠকে বসছেন বেতন কাঠামো নিয়ে লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে আসা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
বৈঠকে আন্দোলন স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে জানিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস তাদের কাছে প্রজ্ঞাপনের চেয়েও ‘বেশি কিছু’।
অষ্টম বেতন কাঠামোর ‘বৈষম্য’ নিরসনের দাবিতে আন্দোলনরত ফেডারেশনের নেতারা বলে আসছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হলেই তাদের জটিলতার অবসান ঘটবে। সোমবার গণভবনে এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে শেখ হাসিনা তাদের সঙ্গে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা আলোচনা করেন।
ওই বৈঠকের পর ফেডারেশনের নেতাদের কথায় কর্মসূচি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও নিজেদের ফোরামে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না হওয়ায় মঙ্গলবারও দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নবম দিনের মতো শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলে।
ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফদির উদ্দিন আহমেদ বলেন, “আজও কর্মবিরতি চলছে। বিকাল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সঙ্গে শিক্ষকদের আলোচনা এবং ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
গত মাসে অষ্টম বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর জোর আন্দোলন শুরু করে আগে থেকে এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।
টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করার বিরোধিতা করছিলেন তারা। পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ সচিবদের সমান গ্রেডে উন্নীত না হওয়ার সুযোগ না থাকাকে তারা ‘মর্যাদাহানি’ হিসেবে দেখছিলেন।
শিক্ষকদের দাবি পর্যালোচনায় সরকার একটি মন্ত্রিসভা কমিটি করার পর কমিটির সভাপতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠকও করেন। ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী শিক্ষকদের তিনটি দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্র“তি দিলেও ১০ দিন পর প্রকাশিত গেজেটে তার প্রতিফলন ঘটেনি বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিগুলোর মোর্চা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ১১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতিতে গেলে দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে পড়ে। এই সঙ্কট কাটাতে শুরু হয় নানামুখী তৎপরতা। এরই ধারাবাহিকতায় আন্দোলনরত শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে পিঠুপুলির দাওয়াত পান সোমবার।
ওই বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে, শিক্ষকরা কর্মবিরতি ছেড়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন।
শিক্ষকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ, জনপ্রশাসন সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।
ইহসানুল করিম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- তৃতীয় গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতির সোপান তৈরি করা হবে, অন্যান্য দাবি ‘যথাযথ’ বিবেচনা করা হবে। শিক্ষকরা বলেছেন-তারা ফোরামে আলোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব ক্লাস শুরু করার ব্যবস্থা নেবেন।”
একই কথা জানিয়ে মঙ্গলবার শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের বিষয়টি তিনি দেখবে। এটা প্রজ্ঞাপনের চেয়ে অনেক বেশি কিছু। শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করিৃসেখানেই কর্মবিরতি ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।”
অবশ্য গত ২ জানুয়ারি কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেছিলেন, “নতুন প্রজ্ঞাপন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।