খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬: জাতীয় পার্টিতে নতুন কো চেয়ারম্যান নিয়োগ ও মহাসচিব পরিবর্তনের যে সিদ্ধান্ত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দিয়েছেন, তা প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়েছে পার্টির সংসদীয় দল।
জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশন সামনে রেখে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠকের পর বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “এ পর্যন্ত যা হয়েছে, চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দলের প্রতিটি সদস্য তার বিরোধিতা করেছেন। আমরা তা মেনে নিতে পারিনি। প্রেসিডিয়াম ও সংসদীয় দলের বৈঠকে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।
“চেয়ারম্যানও বলেছেন, বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
মহাসচিবের পদ হারানো জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মুজিবুল হক চুন্নুসহ রওশন এরশাদপন্থি কয়েকজন সাংসদ এ সময় তাজুলের পাশে ছিলেন।
তবে সভার বিষয়ে পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদ বা তার নতুন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হওলাদারের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
শীর্ষ পর্যায়ে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পাল্টাপাল্টি ঘোষণার মধ্যেই বিরোধী দলীয় নেতা রওশনের সভাপতিত্বে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের এই বৈঠক হয়, যাতে এরশাদও উপস্থিত ছিলেন।
রুহুল আমিন হাওলাদারসহ জাতীয় পার্টির ৪০ জন সংসদ সদস্যের সবাই ছিলেন বৈঠকে।
এই বৈঠক শুরুর দুই ঘণ্টা আগে এক ‘জরুরি’ সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বাবলুকে ‘অব্যাহতি’ দিয়ে হাওলাদারকে মহাসচিব করার ঘোষণা দেন।
তার আগে গত রোববার নিজের জেলা রংপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ভাই জি এম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান ও উত্তরসূরি ঘোষণা করেন এরশাদ।
এর পাল্টায় সোমবার রাতে ঢাকায় পার্টির সাংসদ ও সভাপতিমণ্ডলীর নেতাদের একাংশের ‘যৌথ সভা’ থেকে এরশাদের সিদ্ধান্তকে ‘গঠনতন্ত্রবহির্ভূত’ ঘোষণা হয়। সেইসঙ্গে এরশাদের স্ত্রী বিরোধী দলীয় নেতা রওশনকে দলের ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন’ করা হয়েছে বলে জানান পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
এর মধ্য দিয়ে ১৯৮৬ সালে যাত্রা শুরু করা এই দলটিতে নতুন করে ভাঙনের গুঞ্জন শুরু হয়।
অবশ্য ভাঙনের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বলেন, ‘অসম্ভব’, জাতীয় পার্টি ‘বিভাজিত হবে না’।
“দেয়ার ইজ নো সঙ্কট ইন জাতীয় পার্টি। আমি যতক্ষণ বেঁচে আছি ততক্ষণ কোনো সঙ্কট নোই। নো ওয়ান কুড ব্রেক ইট,” জোর গলায় বলেন এরশাদ।