খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬: বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল সংশোধনের জন্যে প্রতিদিন আবেদন করছেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ, এর মধ্যে বেশিরভাগই সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন সব ছুটি বাতিল করে দু মাস ধরে এ পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনে কাজ করছেন তারা।
নির্বাচন কমিশন স্বীকার করেছে ২০০৮ সালে বিতরণ করা বিপুল সংখ্যক পরিচয়পত্রে ভুল তথ্য পাওয়া গেছে, তবে এতদিন ধরে সংশোধন না করায় এখন সংকট দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের পর সরকারি কর্মকর্তাদের নতুন বেতন সমন্বয়ের জন্যে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারের নির্দেশনা দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।
এরপরই হঠাৎ করেই হাজার হাজার ভুল পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে।
সংশোধনের আবেদন জমা দিতে আজ (মঙ্গলবার) দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে থাকা একজন সরকারি কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, পরিচয়পত্রে তার জন্ম তারিখ ভুল ছাপা হয়েছে।
একই ধরনের কথা বলেন জামালপুর থেকে আসা আরেক সরকারি কর্মচারী শরীফ আহমেদ। তিনি বলেন তার জন্ম সাল ভুল করা হয়েছে যদিও তার দাবি সেই ভুল তিনি করেননি।
বাংলাদেশে বাধ্যতামূলক না হলেও ব্যাংক একাউন্ট খোলা ও পাসপোর্ট নেয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজে বেশ কয়েক বছর ধরেই ব্যবহৃত হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র।
সম্প্রতি মোবাইল ফোনে সীম রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রেও এটি জমা দেয়ার নিয়ম চালু হয়েছে।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন বিভাগের কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলছেন ভুলগুলো আগেই সংশোধন করে নিলে কোন সংকটের সৃষ্টি হতোনা। তবে পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনের কাজ করতে নিরলস কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
তবে শুধু সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীই নয়, ভুল পাওয়া যাচ্ছে অন্যদের পরিচয়পত্রেও। আর এতে করে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে বহু মানুষ।
বরিশাল থেকে আসা রিয়াজুল ইসলাম বলেন তার বাবার নাম ভুল করার কারণে এখন সংশোধনের আবেদন করতে হচ্ছে তাকে।
যশোর থেকে আসা রাজীব আহমেদও তার পরিচয়পত্রে ভুলের জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়ী করেন।
নির্বাচন কমিশনের স্বীকারোক্তি
জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রচুর ভুল থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে শুরুর দিকে বিতরণ করা পরিচয়পত্রগুলোতে অনেক ভুল পাওয়া গেছে। তবে এরপর থেকে আর ভুল হচ্ছেনা বলে দাবি করেন তিনি।
মি শাহনেওয়াজ বলেন, প্রতিদিন দশ হাজারের মতো আবেদন আসলেও লোকবলের অভাবে পাঁচ হাজারের বেশি নিষ্পত্তি করা যাচ্ছেনা।
নির্বাচন কমিশনের হিসেব অনুযায়ী প্রায় নয় কোটি ২০ লাখ নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারাই বলছেন প্রাথমিকভাবে সঠিক ভাবে ফরম পূরণ না করা এবং পরবর্তীতে কম্পিউটারে ডেটা এন্ট্রির সময় ভুল করা- প্রধানত এ দুটিই পরিচয়পত্রে ভুলের জন্যে দায়ী।