খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০১৬: সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ৫ খুনের রহস্য উন্মেচন হয়েছে। এই মামলার আসামী মাহফুজ এই খুনের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। মাহফুজ জানিয়েছেন, তিনি একাই এক এক করে ৫ জনকে খুন করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুজ্জামানের আদালতে মাহফুজ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।পরে দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জনানো হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) খন্দকার মহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, মামি লামিয়ার সঙ্গে ভাগনে মাহফুজের সর্ম্পক ছিল। এই সম্পর্কের কারণে তাঁর মামা শরীফুল ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জে ভাড়া বাড়িতে চলে আসেন। এর আগে হত্যাকাণ্ডের ১৬ দিন আগে লামিয়ার সঙ্গে মাহফুজের অনৈতিক সম্পর্কের কারণে পারিবারিক সালিসে তাঁকে জুতাপেটা করা হয়। এই ঘটনায় ক্ষোভ থেকে মাহফুজ এই হত্যাকাণ্ড ঘটান।
পুলিশ সুপার বলেন, ঘাতক মাহফুজ ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সবার অগোচরে ওই বাসায় প্রবেশ করে একটি খাটের নিচে লুকিয়ে থাকে। রাত ২টার দিকে খাটের নিচ থেকে বের হলে মোশাররফ বিষয়টি টের পান। এ সময় মশলা বাটার শিল (পুতা) দিতে মোশারফের মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ভোরে লামিয়া ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যান। বাথরুম থেকে বের হলে মাহফুজ পুতা দিয়ে একইভাবে মাথায় আঘাত করলে তার মৃত্যু হয়। মৃতদেহটি মোশাররফের রুমে রেখে দরজা ভেতের থেকে বন্ধ করে রাখেন মাহফুজ।
সকালে তাসলিমার ছেলে শান্ত স্কুলে যায়। এরপর তাসলিমাকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয়। এই হত্যার ঘটনা দেখে ফেলায় তাসলিমার মেয়ে সুমাইয়াকে হত্যা করা হয়। আর স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পর শান্তকে হত্যা করে ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালা দিয়ে পালিয়ে যায় মাহফুজ।
জবানবন্দিতে মাহফুজ আরও জানান, ১৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত থেকে ১৬ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত একে একে ৫ জনকে হত্যা করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইল খানকা মোড় এলাকায় ‘আশেক আলী ভিলা’ নামের একটি বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে একই পরিবারের পাঁচজনকে নৃংশসভাবে গলা কেটে হত্যা করে মাহফুজ। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বাড়ির ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন- তাসলিমা আক্তার (৪০) তার ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), ভাই মোরশেদুল (২৫) এবং তার জা লামিয়া (২৫)।