খোলা বাজার২৪,শুক্রবার, ২২ জানুয়ারি ২০১৬: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এসব কমিটিতে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে তারেক রহমানের নাম করে ব্যক্তি বিশেষের সুপারিশকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে ছাত্রদলের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
এদিকে ঢাকা মহানগরকে চার ভাগ করা নিয়েও সংগঠনের মধ্যে নানা সমালোচনা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পছন্দের প্রার্থীকে গুরুত্বপূর্ণ পদে আনতে দায়িত্বপ্রাপ্তরা নিজেদের মতো করে এলাকা ভাগ করেছেন। ছাত্রদলের সভাপতি কারাগারে থাকাবস্থায় মহানগর চার ভাগ ও কমিটি গঠন নিয়েও সংগঠনের ভেতরে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। রাজীব আহসান কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরপরই এসব কমিটি ঘোষণা করার কথা রয়েছে। তবে রাজীবের মুক্তি প্রক্রিয়া বিলম্ব হলে তাকে কারাগারে রেখেই কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সভাপতি হিসেবে আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক পদে আবুল বাশার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সভাপতি পদে রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসিফ রহমান বিপ্লবের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তরে সভাপতি পদে মিজানুর রহমান রাজ ও সাধারণ সম্পাদক পদে হোসেন রুবেলকে রাখা হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় রুবেলের বিরুদ্ধে বাড্ডার চাইল্ডকেয়ার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের একজন শিক্ষিকাকে ধর্ষণের মামলা হয়। ওই মামলায় ২০০৫ সালে বাড্ডা থানায় (মামলা নং ৪৯) গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে। ওই অভিযোগে রুবেলকে সে সময়ে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। তারেক রহমানের নাম ব্যবহার করে ঢাকা মহানগর বিএনপির এক নেতার জোরালো সুপারিশে তাকে চূড়ান্ত তালিকায় রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা দক্ষিণে সভাপতি পদে জহির উদ্দিন তুহীন ও সাধারণ সম্পাদক পদে গাফ্ফার চৌধুরীর নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। তুহীন সম্পর্কে তেমন অভিযোগ না থাকলেও গাফ্ফারের বিরুদ্ধে বিগত আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে না থাকার অভিযোগ রয়েছে। গাফ্ফার বর্তমানে কামরাঙ্গীর চর থানা ছাত্রদলের সভাপতি।
ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি হিসেবে খন্দকার এনাম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কামাল হোসেনকে রাখা হয়েছে। ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, কামাল একসময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ভোল পাল্টে তিনি ছাত্রদলের রাজনীতিতে ঢুকে পড়েন। বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজনীতি ছেড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তাকে পদ দেয়ার খবরে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাকে বাদ দিয়ে যোগ্য ও ত্যাগী কাউকে গুরুত্বপূর্ণ ওই পদ দেয়ার দাবি উঠেছে। এছাড়া ঢাকা মহানগর পশ্চিমে কামরুজ্জামান জুয়েলকে সভাপতি ও সাফায়েত রাব্বী আরাফাতকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি নাজমুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, মহানগর চার ভাগ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ চারটি ছাড়াও ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কমিটি প্রায় চূড়ান্ত। সভাপতি কারাগারে থাকায় তা ঘোষণায় বিলম্ব করা হচ্ছে। সভাপতি কারাগার থেকে বের হলেই তা ঘোষণা করা হবে।