খোলা বাজার২৪, শনিবার ,২৩ জানুয়ারি ২০১৬ : দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যচাহিদা মেটাতে যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটানোর ওপর জোর দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
পাশাপাশি ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে কৃষি অর্থনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শুক্রবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “দেশে দৈনিক পাঁচ হাজার ২৪৭ জন করে মানুষ বাড়ছে; একবছরে বাড়ছে ১৯ লাখ ২৫ হাজার। এই ১৯ লাখ মানুষের খাদ্যের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি বিশ্বাস করি আজকে সময় এসেছে ভিন্ন পথে চলার, ভিন্ন দিকে চিন্তুা করার।”
আগামীতে কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লবের জন্য ‘অটোমেশন’ নিয়ে সরকারের ভাবনার নানা দিক তুলে ধরে মুস্তফা কামাল বলেন, “মানুষ যে কাজগুলো কৃষিতে করে তার বেশিরভাগ কাজ মেশিন করবে।
“সরকার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, একটি গ্রামের সব মানুষকে একপাশে নিয়ে যাব, তাহলে পুরো গ্রামের সম্পূর্ণ ভূমি কৃষির জন্য অবমুক্ত হবে। ওই মানুষগুলোকে গ্রামের একপাশে নিয়ে তাদের অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা দেব।”
তবে এ ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে মানুষের মধ্যে জনমত সৃষ্টি করা ও তাদের উৎসাহিত করার ওপর জোর দেন তিনি।
“কৃষিতে যে কাজটি করা দরকার- প্রত্যেক কৃষককেই একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে। একজন ভাল করলে সবার সঙ্গে শেয়ার করতে হবে।”
রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে (বিএআরসি) বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির ১৫তম জাতীয় সম্মেলন ও সেমিনারের উদ্বোধন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
কৃষি অর্থনীতিবিদদের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “সরকারের অভিযাত্রায় ২০৩০ সালের আগেই দেশের সকল মানুষকে আমরা ক্ষুধামুক্ত করব। কাজটি করতে গেলে সরকার একা পারবে না। আপনারাও সরকার, এ দেশের সব মানুষ সরকার।
“এখানে আপনাদের সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হবে। আমাদের সামনে যে চাহিদা তা মেটাতে গেলে আপনাদের আরও বেশি সক্রিয় থাকতে হবে।’
কৃষি নিয়ে আরও গবেষণা ও প্রযুক্তির উদ্ভাবনের ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এখন আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজন। উচ্চ ভেরাইটির যেসব ধান বা শস্য আবিষ্কার করা হয়েছে, সেগুলোর উৎকর্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়ালে আমি মনে করি, সমস্যা হবে না।”
অনুষ্ঠানে সমিতির স্থায়ী কার্যালয় না থাকার বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে মহাসচিব মো. আহ্সানুজ্জামান লিন্টু।
পরিকল্পনামন্ত্রী তাদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, “আপনাদের দাবি ছিল, একটি নিজস্ব অফিস বা ভবন, প্রকল্প নিয়ে আসেনৃ।”
বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. শামসুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সদ্যপ্রয়াত কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব হোসেন স্মরণে স্মারক বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম এ সাত্তার মণ্ডল।
অনুষ্ঠানে ‘একবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশের কৃষিতে রূপান্তর’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রপস রিসার্চ ইন্সটিটিউট ফর দ্য সেমি-অ্যারিড ট্রপিক্সের (আইসিআরআইএসএটি) মূখ্য গবেষক উত্তম কুমার দেব।