খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৫ জানুয়ারি ২০১৬ : রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীসভার সদস্যদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আজ সোমবার রাতে জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত তিনটি বিল উত্থাপন করেছেন সংসদ কার্যে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। বিল তিনটি উত্থাপনের পর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। সংসদে উত্থাপিত দ্যা প্রেসিডেন্টস (রেম্যুনারেশন এন্ড প্রিভিলেজেস) (এমেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৬-এর প্রস্তাব অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির বেতন ৬১ হাজার ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রপতি বিমানে ভ্রমণ করলে তার বীমার জন্য আগের ১৫ লাখ টাকার পরিবর্তে আইন সংশোধনের পর ২৭ লাখ টাকা হারে তা পাবেন।
তবে রাষ্ট্রপতির স্বেচ্ছাধীন তহবিলে আগের মতই দুই কোটি টাকা থাকবে। দ্যা প্রাইমিনিস্টারস (রেম্যুনারেশন এন্ড প্রিভিলেজেস) (এমেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৬-এর প্রস্তাব অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর বেতন ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। সুবিধা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি বাড়িতে থাকলে প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ পাবেন এক লাখ টাকা, যা আগে ছিলো ৫০ হাজার। আইন সংশোধনের পর প্রধানমন্ত্রীর বিমান ভ্রমণের বীমার সীমা ১৪ লাখ টাকার পরিবর্তে ২৫ লাখ টাকা হবে।
এছাড়া ঢাকার বাইরে গেলে প্রধানমন্ত্রীর দৈনিক ভাতা এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা এবং স্বেচ্ছাধীন তহবিলের আকার এক কোটি থেকে বাড়িয়ে দেড় কোটি টাকা করা হয়েছে। অপর বিল দ্যা মিনিস্টারস, মিনিস্টারস অব স্টেট এন্ড ডেপুটি মিনিস্টারস (রেম্যুনারেশন এন্ড প্রিভিলেজেস) (এমেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৬-এর প্রস্তাব অনুযায়ী, পূর্ণ মন্ত্রী ও সমপর্যায়ের উপদেষ্টাদের বেতন ৫৩ হাজার ১০০ টাকা থেকে এক লাখ ৫ হাজার টাকা, প্রতিমন্ত্রী ও সমপর্যায়ের উপদেষ্টাদের বেতন ৪৭ হাজার ৮০০ থেকে বাড়িয়ে ৯২ হাজার টাকা এবং উপমন্ত্রীর বেতন ৪৫ হাজার ১৫০ থেকে বাড়িয়ে ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে মন্ত্রীদের ব্যয় নিয়ামক ভাতা ৬ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। মন্ত্রীরা বেসরকারি বাড়িতে বসবাস করলে বাসা ভাড়া পাবেন ৮০ হাজার টাকা। আগে এর পরিমাণ ছিল ৪৫ হাজার টাকা।
এছাড়া মন্ত্রীদের বিমান ভ্রমণে বীমার সীমা ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৮ লাখ, দৈনিক ভাতা ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার টাকা এবং স্বেচ্ছাধীন তহবিলের আকার ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করা হয়েছে। বিলে প্রতিমন্ত্রীদের ব্যয় নিয়ামক ভাতা ৪ হাজার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ হাজার টাকা, বেসরকারি বাড়িতে বসবাসের ক্ষেত্রে ভাতা ৪০ হাজার থেকে ৭০ হাজার, বিমান ভ্রমণে বীমার সীমা ৫ লাখ থেকে ৮ লাখ, দৈনিক ভাতা ৭৫০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা এবং স্বেচ্ছাধীন তহবিলের আকার ৩ লাখ বাড়িয়ে সাড়ে ৭ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া উপমন্ত্রীদের ব্যয় নিয়ামক ভাতা ৩ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার টাকা, বেসরকারি বাড়িতে বসবাসের ভাতা ৪০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা, বিমান ভ্রমণে বীমার সীমা ৫ লাখের পরিবর্তে ৮ লাখ টাকা, দৈনিক ভাতা ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা এবং স্বেচ্ছাধীন তহবিলের পরিমাণ ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত হওয়ায় এবং দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা সামঞ্জস্য রক্ষা করে পুণঃনির্ধারণের লক্ষ্যে বিদ্যমান আইনের অধিকতর সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিল উপস্থাপন করা হলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত বছরের ১৯ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই বেতন ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছিল। প্রস্তাবিত আইনের প্রথম অুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নতুন হারের এই বেতন কার্যকর হয় গত বছরের পহেলা জুলাই থেকে। তবে ভাতা কার্যকর হবে চলতি বছরের পহেলা জুলাই থেকে।