Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

29খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬ : যৌনদাসীদের উপর আইএস কী পরিমাণ অকথ্য অত্যাচার করে, সে সম্পর্কে আমরা আগেই খবর প্রকাশ হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, মেয়েদের সঙ্গে জন্তু-জানোয়ারের মতো ব্যবহার করে আইএস।
এবার প্রকাশ্যে এল আইএসের এমন ফতোয়া, যেখানে তারা কীভাবে যৌনদাসীদের ধর্ষণ করা হবে, সেবিষয়ে দলীয় জঙ্গিদের জন্য বিস্তারিত নির্দেশিকা জারি করেছে। এতে দাসীদের সঙ্গে যৌনমিলনের ক্ষেত্রে কয়েকটি নির্দেশনা রয়েছে। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে জারি করা এই ফতোয়াটি প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ফতোয়াটি শুরু করা হয়েছে শরিয়তি আইনের কথা উল্লেখ করে। বলা হয়েছে, যৌনদাসীদের সঙ্গে ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের ভাইয়েরা কিছু নিয়ম লঙ্ঘন করছে। শরিয়তি আইন অনুযায়ী এই লঙ্ঘনকে অনুমোদন দেওয়া যায় না।
একটি আদেশে বলা হয়েছে, বাবা ও ছেলে একই দাসীর সঙ্গে যৌনমিলন করতে পারবে না। আরেকটিতে বলা আছে, কেউ একজন যদি মা ও মেয়ে উভয়ের মালিক হয়ে থাকে তাহলে সে দু’জনের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক গড়তে পারবে না। এক্ষেত্রে যে কোনো একজনকে বেছে নিতে হবে।
এছাড়া দাসীদের ‘সমবেদনা দেখাতে, দয়ালু হতে, আপমানিত না করতে এবং সে যে কাজ করতে সমর্থ নয় সেটি করতে তাকে বাধ্য না করতে’ মালিকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
দাসীদের বিক্রির ক্ষেত্রে এমন কোনো মালিকের কাছে বিক্রি করা যাবে না, যে (ভবিষ্যত মালিক) তার দাসীদের নির্যাতন করতে পারে বলে আগে থেকে অনুমান করা যায়।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা আইএসের বিরুদ্ধে হাজার হাজার নারী ও তরুণী অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে। বিশেষ করে উত্তর ইরাকের ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের নারী ও তরুণীদের অপহরণের অভিযোগ আছে আইএসের বিরুদ্ধে। পুরস্কার হিসেবে আইএস যোদ্ধাদের এসব নারী দেয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। এছাড়া দাস হিসেবে তাদের বিক্রিও করা হয়।
গত এপ্রিলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে ২০ জন নারীর সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়, যারা আইএসের নিয়ন্ত্রণ থেকে পালিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছেন।
তারা জানান, অপহরণ কিংবা আটক করাদের মধ্যে যারা অল্পবয়সি নারী তাদের প্রথমে পুরুষ ও বয়স্ক নারীদের থেকে পৃথক করে আইএস। এরপর ঐ কমবয়সি নারীদের পুরস্কার হিসেবে আইএস যোদ্ধাদের দিয়ে দেয়া হয় কিংবা দাস হিসেবে তাদের বিক্রি করে দেয়া হয়। সেখানে এ সব নারীদের অসংখ্যবার ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হয় বলে জানান তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশ্যাল অপারেশনস ফোর্স গত মে মাসে শীর্ষ এক আইএস জঙ্গিকে ধরতে সিরিয়ায় অভিযান চালনার সময় আইএসের বেশ কিছু ডকুমেন্ট জব্দ করে। এর মধ্যে আলোচিত এই ফতোয়াটিও ছিল।
এক হাজার বছর পুরনো মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদেল ফাতাহ আলাওয়ারি বলেন, আইএস ইচ্ছে করেই গত কয়েক শতাব্দী ধরে চলে আসা কুরআনের আয়াত ও বাণীর ভুল ব্যাখ্যা করছে।
২০১৪ সালে বিশ্বের ১২০ জনেরও বেশি ইসলামিক স্কলার ইসলামিক স্টেটের নেতা আবু বকর আল বাগদাদিকে এক খোলা চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, আইএস জঙ্গিরা যেভাবে নিজেদের বিভিন্ন কাজে ধর্মের দোহাই দেন, তাতে তারা সহমত নন। দাসপ্রথার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ইসলামে নিষিদ্ধ বলেও জানিয়ে দেন তারা।