খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৭ জানুয়ারি ২০১৬: এখনও কুমারী থাকা ১৬ কলেজছাত্রীকে বৃত্তি দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার এক মেয়র। এর মাধ্যমে অন্যদের কুমারীত্ব ধরে রাখার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় খাজুলু-নাটাল প্রদেশের মেয়রের মুখপাত্র জাবুলানি মখোনজা বলেছেন, এ বৃত্তি এবারই প্রথম চালু করা হলো। উথুকেলা জেলার যেসব মেয়ে কুমারী ছিলেন তাদেরকে এবার বৃত্তি দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবছর হাই স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শতাধিক ছাত্রীকে এ বৃত্তি দেবে মেয়রের অফিস। যাদেরকে এবার বৃত্তি দেওয়া হয়েছে তারা স্বেচ্ছায় স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তারা এখনও কুমারী আছেন। তাদের সতীত্বের ওপর কোনো কলঙ্ক লেপন হয়নি। এ জন্য নিয়মিত তারা কুমারীত্ব বিষয়ক টেস্ট করাতে রাজি হয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার রেডিও স্টেশন ৭০২কে এ কথা বলেছেন উথুকেলার মেয়র দুদু মাজিবুকো। তিনি বলেন, এসব কুমারীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ তাদের কুমারীত্ব ধরে রাখার জন্য। আমি আশা করি তারা তাদের ডিগ্রি বা পড়াশোনা শেষ করা পর্যন্ত কমপক্ষে পরবর্তী তিন বছর এই কুমারীত্ব ধরে রাখবেন।
তিনি বলেন, এই বৃত্তি বিভিন্ন সময়ে নবায়ন করা হবে। কারণ, কোনো কুমারী এই সনদকে ব্যবহার করে অন্য উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারেন। এই সনদ দেখিয়ে দাবি করতে পারেন যে, তিনি কুমারী। আর এ দাবি করে তিনি বিভিন্ন কাজ করতে পারেন। তাই তাদের বৃত্তিকে সময়ে সময়ে নবায়ন করা হবে। এই বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে যুবতীদের, কারণ বিপথে যাওয়ার ঝুঁকি, টিনএজ বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া ও তাদের মাধ্যমে যৌনবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় স্কুল পর্যায়ের কিশোরী ও যুবতীদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ হাজার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার রেকর্ড রয়েছে সেখানকার শিক্ষা বিভাগের হাতে। দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের মতে, এখনও প্রাইমারি স্কুলে অধ্যায়ন করা অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের সংখ্যা ২২৩। স্ট্যাটিসটিকস সাউথ আফ্রিকার একটি জরিপে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে ১৪ থেকে ১৯ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে শতকরা ৫.৬ ভাগই অন্তঃসত্ত্বা।
কমিশন ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটির চেয়ারম্যান মফানোজিলওয়ে শোজি বলেছেন, আমি মনে করি এর প্রেক্ষিতে মেয়র যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা মহৎ কাজ। তবে কুমারীত্বের জন্য বৃত্তির বিষয়ে আমরা একমত নই। তবে কুমারীত্ব পরীক্ষা দক্ষিণ আফ্রিকার সংবিধানবিরোধী নয়। বরং অত্যাবশ্যক। বেশ কিছু মানবাধিকারকর্মী দক্ষিণ আফ্রিকায় এ পরীক্ষা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। যারা এ পরীক্ষার পক্ষে তারা বলছেন, এর মাধ্যমে প্রজনন স্বাস্থ্য, এইচআইভি ও এইডস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।