Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

আ'লীগ ‘নষ্ট’ করে, আমরা ‘ঠিক’ করি: নজরুল
আ’লীগ ‘নষ্ট’ করে, আমরা ‘ঠিক’ করি: নজরুল
খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬: ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ‘দুর্নীতির ধারণাসূচকে’ বাংলাদেশের অবস্থানের একধাপ অবনমন নিয়ে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমলেই দেশে দুর্নীতি বাড়ে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে এই সূচকে টানা পাঁচবার বাংলাদেশ সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তকমা পাওয়ার পিছনেও আওয়ামী লীগকে দুষছেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ইতিহাস বলে যে, ১৯৯৬-২০০১ সাল মেয়াদে আওয়ামী লীগের আমলেই বাংলাদেশ প্রথম দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
“পরবর্তীতে আমরা যখন সরকারে আসলাম, তখন শীর্ষ থেকে নামিয়ে নিয়ে আসতে আমাদের কয়েক বছর সময়ে লেগেছে।”
এরশাদের পতনে নব্বইয়ের শুরুতে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসার পর ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে জিতে প্রথম সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ওই সরকারের মেয়াদের শেষ বছর ২০০১ সালে টিআইয়ের দুর্নীতির ধারণা সূচকে শীর্ষ দুর্নীতির দেশ হয় বাংলাদেশ। এরপর বিএনপি ক্ষমতায় এলে টানা পাঁচবছর বাংলাদেশের এই অবস্থান থাকে।
এর ব্যাখ্যায় বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, “এটা স্বাভাবিক। কারণ আপনার সন্তান যখন নষ্ট হয়ে যায়, গাজা ও হিরোইন খাওয়া শুরু করে; একবার যখন অভ্যাস হয়ে যায়, তা সারাতে সময় লাগে। আমাদের (বিএনপিকে) এক নম্বর থেকে নামিয়ে নিয়ে আসতে সময়ে লেগেছে, এটাই সত্য।”
বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা টিআই বিশ্বের ১৬৮টি দেশ ও অঞ্চলে ২০১৫ সালে দুর্নীতি বিবেচনায় নিয়ে তৈরি করা একটি প্রতিবেদন বুধবার প্রকাশ করেছে। তাদের ‘দুর্নীতির ধারণাসূচকে’ ২৫ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী (ভাল থেকে খারাপ) ১৩৯ নম্বরে। আর উল্টোভাবে হিসেব করলে ‘সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত’ দেশের তালিকায় এবার বাংলাদেশ রয়েছে ত্রয়োদশ স্থানে।
এই সূচকে এ বছর বাংলাদেশের অবস্থানের অবনমন ঘটেছে এক ধাপ, তবে স্কোর গতবারের সমান।
সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান।
“আজকেই টিআইবির প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। বাংলাদেশ এর আগে দুর্নীতির সূচকে নিচের দিক থেকে ১৪ ছিল। এবার নিচের দিক থেকে ১৩ হয়েছে। মানে আমাদের দুর্নীতি আরও বেড়েছে।”
জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা- জাসাসের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন নজরুল।
সরকারের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ তুলে এই বিএনপি নেতা বলেন, “দেশে খুন-গুমের ব্যাপারে বিশ্বজুড়ে টিআইয়ের কোনো প্রতিবেদন হয় না। এটা হলে সেখানেও হয়ত বাংলাদেশ এক নম্বরে থাকত।
“বাস্তবতা হচ্ছে এই যে, পঁচাত্তরের জানুয়ারিতে একদলীয শাসন প্রণয়নের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র নিহত হয়েছিল। আর ২০১৪ সালে এটা গুরুতর আহত হয়ে এখন আইসিইউতে আছে।”
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহতের পর এক পর্যায়ে ক্ষমতায় আসেন সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান। তার আমলে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী আবার রাজনীতি করার সুযোগ পায়।
জিয়াউর রহমানের কথিত বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা তুলে ধরে নজরুল ইসলাম বলেন, “দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য শহীদ জিয়া কাজ করেছেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। আর সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। আমরা গণতন্ত্রকে আরো লালন ও শক্তিশালী করতে চাই।”
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমান সম্পর্কে ক্ষমতাসীনরা কটূক্তি করছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, “শহীদ জিয়া ডান-বাম, মধ্য ডান, মধ্য বাম সবাইকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করেছেন। তিনি দেশে ঐক্যের রাজনীতি করেছেন।
“তার শাসনের সময়ে সংসদে কমরেড তোহা, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, রাশেদ খান মেননের মতো নেতা এমপি হলেন। ইসলামিক দল যারা করতেন তারা হয়েছেন।
“তখন জামায়াতে ইসলামী বলে কেনো দল ছিল না। জামায়াতে ইসলামী নামে প্রথম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের সাথে, যে নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। এটাই ইতিহাস।”
সংগঠনের সভাপতি এম এ মালেকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ, অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক খলিলুর রহমান, অধ্যাপক একেএম নুরুল আমিন, অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মনির খান, সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম, আবু সালেহ, সাবেক নেতা মোশাররফ হোসেন ঠাকুর বক্তব্য রাখেন।