খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬: পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তারের পর দুই মাস আগে ‘সমাপ্তি’ ঘটা মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
ঢাকার চকবাজার থেকে গ্রেপ্তার মো. কামালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
নয় মাস আগের ওই যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি উল্লেখ করে গত ডিসেম্বরে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। ফলে অমীমাংসিত অবস্থাতেই আলোচিত এ মামলার পরিসমাপ্তি ঘটে।
এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে একজনকে গ্রেপ্তারের খবর জানানো হয় বৃহস্পতিবার।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মারুফ হোসেন সরদার জানান, আগের রাতে খাজী দেওয়ান লেনের ৭৭ নম্বর বাসা থেকে কামালকে তারা গ্রেপ্তার করেন।
তবে ওই ব্যক্তির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বা কীভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হলো- সে বিষয়ে কোনো তথ্য পুলিশ জানায়নি।
মারুফ হোসেন বলেন, “মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ওই ঘটনায় আটজনকে সনাক্ত করেছিল। গ্রেপ্তার কামাল তাদের একজন।”
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কামাল ওই ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
গত ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাংলা নববর্ষের উৎসবের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে ভিড়ের মধ্যে একদল যুবক নারীদের ওপর চড়াও হয়।
প্রথমে পুলিশ ঘটনাটি এড়াতে চাইলেও বিভিন্ন ছাত্র ও নাগরিক সংগঠনের দাবির মুখে এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলা এবং তদন্তের উদ্যোগ নেয়।
এরপর ১৭ মে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও থেকে আট নিপীড়কের ছবি পাওয়ার কথা জানান পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক। তাদের ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেন তিনি।
তবে ঘটনার আট মাস পর গত ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই দীপক কুমার দাস ঢাকার আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে বলেন, পুলিশ অপরাধী কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি।
কামালকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। মামলা সক্রিয় না থাকায় তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন এস আই দীপক।
শুনানি শেষে মহানগর হাকিম আবদুল্লাহ আল মাসুদ কামালকে দুই দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
এ সময় কামালের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হলেও বিচারক তা নাকচ করে দেন।
আদালতের পুলিশ সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এস আই আনিসুর রহমান জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা পুরনো মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করতে ঢাকার ৩ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি আবেদন করেছেন। তবে কবে এ বিষয়ে শুনানি হবে, তা ঠিক হয়নি।