Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

29খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারি ২০১৬: সকালে পিচে কিছুটা আর্দ্রতা ছিল, সেটির পুরো ফায়দা তুলে নিলেন। ওপেনিংয়ে বল হাতে নিয়ে প্রথম ৪ ওভারেই মাত্র ১০ রান দিয়ে তুলে নিলেন আফগানিস্তানের ৩ উইকেট। হাসান মহসিনের বোলিংয়ে ভর করেই সিলেটে গতকাল অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বেশ সহজ জয় পেয়ে গেল পাকিস্তান।
পেসার বল করেছেন, শীতের সকালের পিচের সুযোগ তুলে নিয়ে উইকেট নিয়েছেন—এ আর এমন কী! পাকিস্তানে তো ভূরি ভূরি পেস বোলার আছে। ম্যাচের গল্পটা সাধারণ হতে পারে, তবে হাসানের ‘ওপেনিং বোলার’ বনে যাওয়ার গল্পটা একেবারে সাধারণ নয়। মাত্র ছয় মাসের মধ্যে সাধারণ মানের লেগ স্পিনার থেকে বিশ্বকাপের মঞ্চে পুরোদস্তুর স্ট্রাইক বোলার বনে যাওয়ার গল্পটাকে একেবারে ‘সাধারণ গল্পে’র কাতারে ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না।
মূল পরিচয় ব্যাটিং অলরাউন্ডার। পাঁচ-ছয় নম্বরে নেমে ব্যাট করেন, সঙ্গে হাত ঘুরিয়ে বলকে লেগ স্পিন করাতে পারেন—গত বছরের মাঝামাঝি সময়েও হাসানের পরিচয়টা ছিল এমন। কিন্তু লেগ স্পিন দিয়ে কিছু হচ্ছিল না।
উইকেট পাচ্ছিলেন না নিয়মিত। তাই ধরন বদলে পুরো পেসার বনে গেলেন হাসান। পেসার থেকে স্পিনার হয়ে যাওয়ার অনেক গল্পই ক্রিকেটে খুঁজে পাবেন। তবে স্পিনার থেকে পেসার হওয়া—বিরল তো অবশ্যই!
পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে কিছুদিন পেস বোলিংয়ে হাত মকশো করেছেন। প্রথম ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ নিয়ে গেলেন গত অক্টোবরে শ্রীলঙ্কা সফরে। সেখান থেকে শুরু। এরপর নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ, আর এই বিশ্বকাপ—পুরোদস্তুর পেসার হয়ে উঠছেন হাসান। অক্টোবর থেকে এই পর্যন্ত ১০ ম্যাচে ১৪ উইকেট পেয়েছেন ১৮ বছর বয়সী পেসার (এক ম্যাচে বোলিং করেননি)।
ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজেই জানালেন পেসার হয়ে ওঠার গল্পটা, ‘(লেগ স্পিনে) ধারাবাহিক ছিলাম না। গত বছর জুলাইয়ে পেস বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিলাম। কোচও (মোহাম্মদ মাশরুর) বললেন, আমার পেস বোলিং করা উচিত। আমি ব্যাটিং অলরাউন্ডার, কিন্তু নতুন বলেও ভালো বল করতে পারি। অধিনায়কের ভরসা আছে আমার ওপর। কোচ-অধিনায়ক দুজনই বিশ্বাস জুগিয়েছেন, এটাও সাহায্য করেছে।’
বোলিং আক্রমণের নেতা বলতে যা বোঝায়, এখনো ঠিক সেটি হয়তো হতে পারেননি পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৯ দলটির। তবে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের মতো আক্রমণাত্মক দলের বিপক্ষে ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে হাসান হয়তো ভবিষ্যতের একটা ছবি আঁকতে চাইছেন। মাত্রই ছয় মাস আগে পেস বোলিং শুরু করা একজন বোলার হিসেবে তাঁকে অনেক প্রস্তুত মনে হচ্ছে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে তাঁর তিন উইকেটের দুটিই এসেছে পয়েন্ট আর প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে, অন্যটি বোল্ড। আর এর পেছনে চাইলে ফিল্ডিং সাজানোতে হাসানের দক্ষতাও খুঁজে নেওয়া যায়। বয়স মাত্র ১৮। এখনো অনেক উন্নতি করার সুযোগ আছে নিশ্চিতভাবেই। তবে কে জানে, এই বিশ্বকাপেই হয়তো আগামী দিনের ‘আবদুল রাজ্জাক’ হওয়ার একটা বার্তা দিতে চাইছেন হাসান, অথচ তিনি হতে চেয়েছিলেন শহীদ আফ্রিদির মতো অলরাউন্ডার! সূত্র: ক্রিকইনফো।