Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

32খোলা বাজার২৪, সোমবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া এইচ১এন১ ভাইরাস, যা এখন সোয়াইন ফ্লু নামে পরিচিত, মেক্সিকো থেকে বাংলাদেশে ২০০৯ সালের জুনে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল দুই মাস।
উৎকণ্ঠিত লোকজনকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে ভিড় করতে দেখা যায়। আনুমানিক ১০ হাজার মানুষ সে সময় ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হন, যাদের অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়।
এই অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশিরা এখন ভয়ে আছেন জিকা ভাইরাসের, যা এরইমধ্যে আমেরিকায় ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এই ভাইরাস সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হয়ে এসেছে নবজাতকদের নিয়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গর্ভবতী মা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার অনাগত শিশুর মাথা স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হতে পারে, মস্তিষ্কের গঠন থাকতে পারে অপূর্ণ। এ রোগকে বলে মাইক্রোসেফালি।
এর ফলে আক্রান্ত শিশু ‘বুদ্ধি প্রতিবন্ধী’ হতে পারে; কোনো কোনো ক্ষেত্রে অবিকশিত মস্তিষ্ক শিশুর মৃত্যুরও কারণ হতে পারে। তবে জিকা ভাইরাস ঠিক কীভাবে গর্ভের শিশুর এই ক্ষতি ঘটায় তা এখনো উদ্ঘাটন করা যায়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, জিকা ভাইরাস সংক্রমণ এখন ‘বিস্ফোরকের’ মতো ছড়িয়ে পড়ছে। গত এক বছরে তিন থেকে চার কোটি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন।
অনেকে বলছেন, ল্যাতিন আমেরিকায় এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য ইবোলার চেয়ে বড় হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। ইবোলায় আফ্রিকায় ১১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এটাকে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংকট’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সোমবার জরুরি বৈঠকে বসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
জিকার বাহক এডিস এজিপ্টি মশা বাংলাদেশে থাকায় এই ভাইরাস নিয়ে এখানে উদ্বেগের কারণ রয়েছে। এডিস এজিপ্টি থেকে ডেঙ্গু জ্বরে বাংলাদেশে অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, “আমাদের জিকার পোষক রয়েছে। তবে ভাইরাসটি নেই।
“আমরা সতর্ক রয়েছি, যেমনটি সব সময় থাকি।”
যেসব দেশে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে সেগুলোতে বাংলাদেশিদের ‘খুব বেশি’ যাতায়াত নেই বলে জানান অধ্যাপক মাহমুদুর।
“এরপরেও ভাইরাসের ক্ষেত্রে কোনো অনুমান কাজে খাটে না বলে জিকা চলে আসতে পারে। তবে এরজন্য সময় নেবে।”
জিকা ভাইরাসের কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন না থাকায় সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দেন আইইডিসিআর’র পরিচালক।
মশার কামড় থেকে এড়িয়ে চলা এবং এর বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
জিকা ভাইরাসের লক্ষণ সবসময় স্পষ্ট থাকে না। প্রতি পাঁচজন রোগীর মধ্যে একজনের হালকা জ্বর, চোখে লাল হওয়া বা কালশিটে দাগ পড়া, মাথা ব্যথা, হাড়ের গিঁটে ব্যথা ও চর্মরোগের লক্ষণ দেখা যায়।
জিকা ভাইরাস বহনকারী মশা দিনের বেলাতেও কামড়ায় বলে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন।
এই ভাইরাস আমেরিকান দেশগুলোতে এমন প্রভাব ফেলেছে যে, কলম্বিয়া, ইকুয়েডরসহ বেশ কয়েকটি দেশে দম্পতিদের ‘গর্ভধারণ’ পেছানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান মার্গারেট চ্যান সম্প্রতি সংগঠনের নির্বাহী পর্ষদের সদস্যদের এ ভাইরাস নিয়ে বলেন, “অনেক কিছু নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা থাকায় উদ্বেগের মাত্রা খুব বেশি।