Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

21খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : বাঁচানো গেল না পুলিশের সোর্সের নির্দয়তার শিকার চা বিক্রেতা বাবুল মাতুব্বরকে (৪৫)। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মোজাম্মেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাবুলের মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে স্বজনেরা আহাজারি করছেন। এ সময় বাবুল মাতুব্বরের ছেলে রাজু বলেন, ‘পুলিশ আমার বাপটাকে মারল। আমাদের এখন কী হবে?’
রাজু বলেন, ‘আমার বাবা মিরপুর বেড়িবাঁধসংলগ্ন কিংশু সমিতির সামনের ফুটপাতে চা বিক্রি করেন। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি দোকানে কাজ করছিলেন। এ সময় ওই রাস্তা দিয়ে পুলিশের সোর্স দেলোয়ারসহ আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্য যাচ্ছিলেন। তারা বাবার কাছে এসে চাঁদার টাকা দাবি করেন।’
তবে কত টাকা তা বলতে পারেনি তিনি। রাজু জানান, টাকা না দেওয়ায় তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একসময় দেলোয়ার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে চায়ের চুলায় (স্ট্রোভ) আঘাত করে। এ সময় চুলাটি বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে তার বাবার শরীর ঝলসে যায়। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাবুলকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে হাসপাতালে আনা হয়। তিনি যন্ত্রণায় চিৎকার করছিলেন। পরে তাকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল জানান, আগুনে ওই ব্যক্তির শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে, বাবুলকে নির্যাতনের অভিযোগে সাতজনকে আসামি করে শাহআলী থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলায় একজনকে এরই মধ্যে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে মামলার আসামিদের মধ্যে কোনো পুলিশ সদস্য নেই।
শাহআলী থানা পুলিশ জানায়, নিহতের মেয়ে রোকসানা আক্তার থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন। সেখানে সাতজনকে আসামি করা হয়। এরা হলেন- পারুল আক্তার, পুলিশের সোর্স দেলোয়ার, আইয়ুব আলী, রবিন, শংকর, দুলাল হাওলাদার ও পারভিন। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে পারুলকে বৃহস্পতিবার সকালে মিরপুরের গোদারাঘাট থেকে গ্রেফতার করা হয়।
শাহআলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিন মণ্ডল জানান, নিহত বাবুল মাতুব্বর ও আসামিদের মধ্যে অনেকদিন ধরে মাদক ব্যবসা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এক্ষেত্রে পুলিশকে পাশ কাটানোর প্রশ্নই ওঠে না।
শাহিন মন্ডল বলেন, ‘দেলোয়ার পুলিশের কোনো সদস্য নয়। এ থানায় এই নামে কেউ নেই। সে মূলত পুলিশের সোর্স। তাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।