Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

3খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে আইনপ্রণেতাদের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগ নিলেও তার প্রতিফলন বাস্তবে ঘটবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলটির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংসদ সদস্যদের বাড়ি ও কার্যালয়েই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তৃণমূল নেতারা বলছেন, সংসদ সদস্যরা এলাকার রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়ায় এবং তাদের ‘হাতেই’ বিভিন্ন কমিটি গঠিত হওয়ায় তাদের মত উপেক্ষা করার বাস্তবতা নেই।
তবে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ও যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই প্রার্থী মনোনয়ন হবে। সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ থাকবে না।
চলতি ফেব্র“য়ারির মাঝামাঝিতে প্রথম পর্বের ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে। আইন সংশোধনের পর এবার চেয়ারম্যান নির্বাচন হবে দলীয় প্রতীকে। ইসির ঘোষণার পর গত ১৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মনোনয়ন বোর্ডের সভায় দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে সংসদ সদস্যদের না রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
গত পৌরসভা নির্বাচনে দলের সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপে অনেক এলাকায় প্রার্থী বাছাইয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল ক্ষমতাসীন দলটিকে। বিভিন্ন স্থানে দলীয় প্রার্থীর বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিতে দেখা গিয়েছিল সংসদ সদস্যদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, “দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, এমপি সাহেবের বাইরে আমাদের কিছু করার নেই। যা হবে সব তার নির্দেশে। তিনি আমাদের যে তালিকা দেবেন, আমরা তাতে সুপারিশ করে দিব।”
সংসদ সদস্যদের প্রভাব উপেক্ষার কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এমপি সাহেব নিজে বানিয়েছেন। সুতরাং এমপির বাইরে বাছাই তালিকা দেওয়ার সুযোগ নেই। প্রার্থীরা সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের কাছে না গিয়ে তাই উনার কাছে ভিড় করছেন।”
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জুর মোল্লা বলেন, “আমাদের এমপি সাহেব জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার পরামর্শ আমাদের নিতেই হবে। বাস্তবে যারা মনোনয়ন পাবেন, তাদের সবাই সাংসদের পছন্দের হবেন।”
নোয়াখালী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিন শাহীন বলেন, “প্রার্থী বাছাইয়ে কেন্দ্রীয় হাই কমান্ডের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা কাজ করব। তবে অবশ্যই এমপি সাহেবের পরামর্শ নিয়ে আমাদের নিতে হবে।”
পৌরসভা নির্বাচনের সময় স্থানীয় প্রার্থী বাছাই কমিটিতে ছিলেন সংশ্লিষ্ট জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং সংশ্লিষ্ট আসনের সংসদ সদস্য।
কিন্তু ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই কমিটিতে থাকছেন শুধু জেলা, উপজেলা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক।
ইতোমধ্যে প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য একজন প্রার্থী চূড়ান্ত করে তার নাম কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার প্রার্থী মনোনয়ন বোর্ড।
কেন্দ্রীয় নেতা হানিফ বলেন, “এখানে সাংসদদের কোনো কর্তৃত্ব নেই। যারা অভিযোগ করেছে, তাদের কথার কোনো ভিত্তি নেই। এ সকল কথা-বার্তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আর অনেকে অনেক কথাই বলবে।”
ইউপি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী বাছাইয়ে সংসদ সদস্যদের সম্পৃক্ত না করাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম-১৩ আসনের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, “স্থানীয় পর্যায়ে সাংসদের সঙ্গে জেলা-উপজেলা-ইউপি পর্যায়ের নেতাদের ভিন্নমত ধরা পড়লে অনেককে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হত।”
মনোনয়ন না পাওয়ার আশঙ্কা থেকে অনেকে সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপের কথা উঠছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।