খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার নয় ছেলেটার স্বপ্ন ছিল ‘অঙ্গ দাতা’ হওয়ার। চিকিৎসা নয়, নিজের অঙ্গ দিয়ে বাঁচাতে চাইত অন্যের জীবন। সিডনির কোয়াকার্স হিল পাবলিক স্কুলের ছাত্র সে।
দেয়ান উদানি স্কুলের বন্ধুদের থেকে শুনেছিল মৃত্যুর পরেও মানুষের শরীরের একাধিক অঙ্গ সচল থাকে বেশ কিছুক্ষণের জন্য। তা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বাঁচানো যায় মৃত্যুপথযাত্রী মানুষের জীবন। সাত বছরের দেয়ান উদানি বাবার কাছে বায়না করত অঙ্গ দাতা হিসেবে তার নাম নথিভুক্ত করতে। ছেলের আবদার রাখলেন অস্ট্রেলিয়ার উদানি দম্পতি তবে দেওয়ানের মৃত্যুর পরে।
নিজেদের দেশে যখন গ্রীষ্মের দাবদাহ বইছে। সেই সময় নববর্ষের ছুটি কাটাতে পুত্র-কন্যা সহ ভারতে এসেছিলেন উদানি দম্পতি। গত মাসের ২২ তারিখ তাঁদের সিডনির উড়ান দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, ছেলে দেওয়ানের মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরণের ফলে তা সম্ভব হয়নি।
ছেলেকে ভর্তি করতে হয়েছিল মুম্বাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে। কয়েকদিনের লড়াইয়ের পর জীবন যুদ্ধ থেমে যায় সাত বছরের দেয়ানের। ছেলের ইচ্ছাকে সম্মান দিয়ে তার অঙ্গ দানের সিদ্ধান্ত নেন সিডনি দেয়ান দম্পতি। তড়িঘড়ি সেই ব্যবস্থাও সেরে ফেলেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত রিকি পন্টিংয়ের শহরের বাসিন্দা দেয়ানই ভারতের সর্বকনিষ্ঠ অঙ্গ দাতা।
দেয়ানের দান করা হৃদপিণ্ড, দু’টি কিডনি এবং যকৃৎ দিয়ে নতুন করে জীবন ফিরে পেয়েছে চার জন। দেয়ানের বয়সীই একটি মেয়ের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে তার হৃদপিণ্ড। মেয়েটি হৃদরোগের সমস্যায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিল। কিডনি দু’টি প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে ১১ বছর ও ১৫ বছর বয়সী দু’জনের দেহে। ৩১ বছরের একজনের শরীরে কাজ করছে দেয়ানের যকৃৎ। “দেয়ানের ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে ‘অঙ্গ দাতা’ হবে। খুব ছোট বয়সেই অর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেল,” ছল ছল চোখে জানালেন দেয়ান জননী মিলি উদানি।