খোলা বাজার২৪, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : টাঙ্গাইল-৪(কালিহাতী) আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না হাইকোর্টের এমন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী।
রোববার এ আবেদনটি দায়ের করেন সিদ্দিকীর আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী।
এ আবেদনের ওপর চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকির আদালতে আজ শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানীতে কাদেরের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এজে মোহাম্মাদ আলী, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী। অপরদিকে নির্বাচন কমিশন, অগ্রনীব্যাংক ও রাষ্ট্রপক্ষে আলাদা আলাদাভাবে আইনজীবীরা অংশ নেন।
শুনানী শেষে আদালত আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে কাদের সিদ্দিকীর লিভ টু আপিল ২ সপ্তাহের জন্য মুলতবি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল-৪(কালিহাতী) আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মর্মে রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১২৫ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ি নির্বাচন শুরু হওয়ার পর (তফশিল-ফলাফল পর্যন্ত) নির্বাচন কমিশনের পুনঃসিন্ধান্তের ওপর হাইকোর্টে কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না। তবে কোনো প্রতিকার পেতে প্রার্থীকে নির্বাচনী ট্রাইবুনাল যেতে হবে।
টাঙ্গাইল-৪ আসনে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী। গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর তিনি পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করে ৩ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়।এরপর গত বছরের ১০ নভেম্বর টাঙ্গাইল-৪ আসনে উপ-নির্বাচনের দিন ধার্য করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
অন্যদলের পাশাপাশি এতে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে কাদের সিদ্দিকী ও তার স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
কিন্তু ঋণখেলাপের অভিযোগে গত বছরের ১৩ অক্টোবর রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। এরপর ১৬ অক্টোবর এ দুই নেতা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসিতে আপিল আবেদন করেন।
১৮ অক্টোবর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন কাদের সিদ্দিকীর আপিল খারিজ করে তার মনোনয়নপত্র বাতিলের চূড়ান্ত রায় দেন।এরপর নির্বাচন কমিশনের বাতিল আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন কাদের সিদ্দিকী।
এ রিটের শুনানি নিয়ে গত বছরের ২১ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত ও কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বৈধ বলে আদেশ দেন বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আদেশের বিষয়ে রুল জারি এবং রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত করেন আদালত।
পরে ২৬ অক্টোবর কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন জানান ইসির অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ড ব্যারিস্টার ড. মো. ইয়াসিন খান।
পরদিন ২৭ অক্টোবর আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদালত টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপ-নির্বাচনই স্থগিত করে দেন। একইসঙ্গে ইসি’র আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়ে ২ নভেম্বর এর শুনানির দিন ধার্য করে দেন।
২ নভেম্বর চেম্বার বিচারপতির দেয়া উপ-নির্বাচনের ওই স্থগিতাদেশ বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত উপ-নির্বাচন স্থগিত রেখে এর মধ্যে কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল বিচারপতি মো.আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চে নিষ্পত্তির আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।